২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:৪২

কোচিং ও গাইড বইয়ে বছরে খরচ ৩০ হাজার টাকা: গবেষণা

শ্রেণিকক্ষে অধ্যয়নরত একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা  © ফাইল ছবি

দেশের দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় অবস্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিয়মিত পাঠ্যসূচির বাইরে শিক্ষাগ্রহণের জন্য কোচিংয়ে অংশগ্রহণ করে প্রায় ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী। এসব এলাকার কোচিং-প্রাইভেট টিউশন ও গাইড বইয়ের জন্য অভিভাবকদের মাসে ২০০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয় শিক্ষার্থীদের জন্য। সে হিসেবে বছরে এসব শিক্ষার্থীর পেছনে তাদের অভিভাবকদের খরচ করতে হয় ২ হাজার চারশ থেকে ৩০ হাজার টাকা। সম্প্রতি দেশের খুলনা বিভাগের দুটি জেলার চার উপজেলার ২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওপর করা এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে জাতীয় নীতি সংলাপ’এবং গবেষণার তথ্য প্রকাশকালে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। গবেষণায় অংশগ্রহণ করেন দেশের দক্ষিণাঞ্চলের খুলনার বটিয়াঘাটা ও দাকোপ এবং বাগেরহাটের মোংলা ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার মোট ৮০৪ জন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়েব ফাউন্ডেশন এবং তাদের সহযোগীদের নিয়ে এ গবেষণাটি সম্পন্ন করা হয়।

আরও পড়ুন: ভাগ অংশের সমাধান পারে না প্রাথমিকের ৯৫% শিশু

গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গবেষণার অন্তর্ভুক্ত বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ নিজ উদ্যোগে কোচিং করে। স্কুলশিক্ষকের কাছে কোচিং বা টিউশন নেয় ২৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। ১১ দশমিক ১৯ শতাংশ শিক্ষার্থী স্কুল থেকে আলাদা কোচিং নেয়। স্কুল থেকে কোচিংয়ের জন্য গড়ে ৩৬৭ টাকা, নিজ উদ্যোগে করা কোচিংয়ের জন্য ৮৩৪ টাকা, স্কুলশিক্ষকের কাছে কোচিং বা প্রাইভেট টিউশনের জন্য মাসে ৫২১ টাকা ব্যয় করতে হয় শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের।

এছাড়াও এ শিক্ষাস্তরের ১ দশমিক ৬২ শতাংশ শিক্ষার্থী স্কুল থেকে দেওয়া গাইড বই ব্যবহার করে বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। গবেষণায় উঠে এসেছে, শিক্ষার্থীদের গাইড বই সরবরাহ করা হয় না—শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এমন দাবিও।

আরও পড়ুন: একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখে নতুন শিক্ষাক্রমের বৈশ্বিক গুণ-মান অর্জন

অনুষ্ঠানে আলোচনায় বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমদ নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে প্রস্তুতির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। সে জন্য প্রস্তুতির কথা বারবার আসছে। প্রস্তুতি ঠিকমতো না হলে বড় বিপদের আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (কার্যক্রম) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রঞ্জন সাহা পার্থ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক শাহ শামীম আহমেদ, স্ট্রিট চাইল্ডের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক ইমতিয়াজ হৃদয় প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক কানিজ ফাতেমা।