একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছে দুই উপজেলায়!

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুই স্থানে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুই স্থানে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।  © সংগৃহীত

চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের উত্তর খাউরিয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন চলতি মাসের শুরুতে ব্রহ্মপুত্র নদের ভঙ্গনে বিলীন হয়েছে। ফলে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের ক্লাস করার কোনো জায়গা অবশিষ্ট থাকে নি। এ সুযোগে বিদ্যালয়ের শিক্ষদের দুইগ্রুপ দুই স্থানে ক্লাস নেওয়া শুরু করে। অভিভাবকদের অভিযোগ শিক্ষারা দুই উপজেলায় অবস্থান করায় তারা তাদের সুবিধামতো দুই স্থানে ক্লাস নিচ্ছেন। এতে বিপাকে পারেছে শিশু শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জুলেখা ইয়াসমিন ও সহকারী শিক্ষক এম এইচ এ হাসান মাহমুদ উত্তর খাউরিয়ার চরে অন্যের বাড়িতে সাময়িক ক্লাস শুরু হয়। এদিকে বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক আবু হোসেন মোল্লা, লায়লা খাতুন ও মোবারক হোসেন রৌমারী উপজেলার চর খেদাইমারী এলাকায় ঘর তৈরি করে কিছু শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাচ্ছেন। এতে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

এদিকে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাহফুজা আক্তার এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জুলেখা ইয়াসমিন কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয়েছে, উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে স্কুল উত্তর খাউরিয়ার চরের একটি বাড়িতে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে গত ১২ আগস্ট রৌমারীর খেরুয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু বক্কর ছিদ্দিক এবং এ বিদ্যালয়ের তিন সহকারী শিক্ষক প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় রৌমারীর চর শৌলমারী ইউনিয়নে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করেন। চর খেদাইমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ঘর নির্মাণ করেন তারা। তিনি খাউরিয়ার চর এলাকার মোন্নাফ মিয়ার বাড়িতে পাঠদান করাচ্ছেন।

এদিকে বিদ্যালয়টি রৌমারিতে স্থায়ীভাবে স্থানান্তর করার জন্য এলাকার প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় বিদ্যালয়ের অপর সহকারী শিক্ষক আবু হোসেন মোল্লা পায়তারা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে চরের বাসীন্দারা বলছেন বিদ্যালয়টি চর খাউরিয়াতেই হতে হবে। না হয় তাদের সন্তানদের আর পড়াশোনা করা হবে।

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সহকারী শিক্ষক আবু হোসেন মোল্লা। তিনি বলেন, বিদ্যালয়টি রৌমারীর সীমানায় প্রায় ৩৩ বছর ছিল। নয়ারহাট ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রৌমারীতে স্থানান্তর করেছেন। তারা তিন শিক্ষক সেখানে কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামানের ভাষ্য, বিদ্যালয়টি ব্রহ্মপুত্রে বিলীন হওয়ায় পরীক্ষা ও পাঠদান ব্যাহত হচ্ছিল। পরে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার অনুরোধে সাময়িকভাবে সেখানে ঘর তোলা হয়েছে। পানি কমলে সবার মতামতে বিদ্যালয়টি পুনর্নির্মাণ করা হবে।

চিলমারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সালেহ্‌ সরকার জানান, সাময়িকভাবে বিদ্যালয়টি অন্য উপজেলায় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পানি কমলে অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিন সরকার জানান, এক উপজেলার বিদ্যালয় অন্য উপজেলায় নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ