মেলেনি অনুমোদন, সেপ্টেম্বরে প্রথম ধাপের পরীক্ষা আয়োজন নিয়ে শঙ্কা

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও ক্লাসে শিক্ষক
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও ক্লাসে শিক্ষক  © ফাইল ফটো

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রথম ধাপের পরীক্ষা সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না মেলায় সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ধাপে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের প্রার্থীদের পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো চিঠির জবাব দেয়নি মন্ত্রণালয়।

ওই সূত্র আরও জানায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর পরীক্ষা আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে চুক্তি করতে হবে। এই প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় প্রয়োজন হবে। কাজেই সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রথম ধাপের পরীক্ষা আয়োজন করা কঠিন হয়ে যাবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পলিসি অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজনের জন্য অনেকদিন আগেই অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে নানা কারণ দেখিয়ে সেই চিঠির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। এই অবস্থায় সেপ্টেম্বরে পরীক্ষা আয়োজন করা কঠিন হবে।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর বুয়েটের সাথে চুক্তি করতে হবে। সেখানেও সময় লাগবে। পরীক্ষার কেন্দ্র নির্বাচন, প্রশ্নপত্র ছাপানোসহ বেশ কিছু কাজ বাকি রয়েছে। এই অবস্থায় পরীক্ষা কবে আয়োজন করা হবে সে বিষয়ে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি পেতে প্রাথমিকের সচিব ফরিদ আহাম্মদ অর্থ সচিবের সাথে দেখা করার চেষ্টা করছেন। অর্থ সচিবের সাথে বৈঠক শেষে নিয়োগ পরীক্ষার অনুমতি পাওয়া যেতে পারে।

ওই সূত্র আরও জানায়, অর্থ সচিবের সাথে বৈঠক শেষে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলে বুয়েটের সাথে চুক্তি করা হবে। বুয়েটের সাথে চুক্তি সম্পন্ন করতে এক সপ্তাহ সময় প্রয়োজন হবে। এরপর বুয়েট আসনবিন্যাস তৈরি করবে। এই কাজ শেষে পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় আমাদের নিজেদেরই পরীক্ষা নিতে বলেছিল। তবে আমরা জানিয়েছি বুয়েট  কারিগরি দিকটা দেখবে। আমরা বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে আবার পুনর্বিবেচনার জন্য পাঠিয়েছি। অর্থ মন্ত্রণালয় সম্মতি দিলে আমরা সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রথম ধাপের লিখিত পরীক্ষা আয়োজন করব।

এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধাপে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ ধাপে আবেদনের শেষ সময় ছিল ২৪ মার্চ। প্রথম ধাপে আবেদন জমা পড়ে ৩ লাখ ৬০ হাজার ৭০০টি।

দ্বিতীয় ধাপে ২৩ মার্চ ময়মনসিংহ, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আবেদনের শেষ সময় ছিল ১৪ এপ্রিল। দ্বিতীয় ধাপে আবেদন জমা পড়ে ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৪৩৮টি।

এরপর ১৮ জুন তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এ ধাপে আবেদন শেষ হয় গত ৮ জুলাই। তৃতীয় ধাপে আবেদন জমা পড়েছে ৩ লাখ ৪০ হাজারের কিছু বেশি।

সাড়ে ৭ হাজার পদে শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদন নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই সঙ্গে জানানো হয়- শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ করে প্রয়োজনে বেশি সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।

প্রাথমিক অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ সংগৃহীত তথ্যানুযায়ী সারাদেশে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের আট হাজার ৬৮টি পদ শূন্য রয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ