২০ শতাংশ প্রাথমিক শিক্ষার্থী সুপেয় পানি পাচ্ছে না
সুপেয় পানি পাওয়ার ক্ষেত্রে দেশে এক দশকে বেশ উন্নতি হয়েছে। এরপরও দেশের ২০ শতাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সুপেয় পানি পাওয়ার ব্যবস্থা নেই। আর একেবারেই পানির উৎস ছয় শতাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও ইউনিসেফের ‘জয়েন্ট মনিটরিং প্রোগ্রাম-জেএমপি প্রতিবেদন ২০২১’-এ এমন চিত্র উঠে এসেছে।
এতে দেখা গেছে, খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৭৯টি। নলকূপ আছে ৪৭টিতে। পাহাড়ের ওপর ও দুর্গম এলাকা হওয়ায় অনেক বিদ্যালয়ে নলকূপ বসানো যাচ্ছে না। পিরোজপুরের কাউখালীতে প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৭টি। এর মধ্যে চারটিতে নলকূপ আছে, সেগুলোও নষ্ট। মাঝেমধ্যে নলকূপে সমস্যা হয় বলে জানিয়েছেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা কে এম জামান।
জানা গেছে, দেশে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে ১ লাখ ১৮ হাজারের বেশি। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ কোটি ৩৩ লাখ। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে শিক্ষার্থী প্রায় দুই কোটি।
জেএমপির জরিপে পানির উৎসকে তিনটি স্তরে ভাগ করা হয়েছে। উন্নত উৎসের সহজে প্রাপ্য পানি, উন্নত উৎস কিন্তু সহজ প্রাপ্য নয় এবং অনুন্নত উৎস বা একেবারেই কোনো উৎস নেই। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উভয় ক্ষেত্রে ৮১ শতাংশ স্কুলে উন্নত ও সহজে প্রাপ্য পানির ব্যবস্থা আছে। ১৪ শতাংশ স্কুলে উৎস ঠিক থাকলেও পানি সহজপ্রাপ্য নয়। পাঁচ শতাংশ স্কুলে পানির উন্নত উৎস নেই বা একেবারেই ব্যবস্থা নেই।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, স্কুলে সুপেয় পানি ও স্যানিটেশনের উন্নতি হয়েছে। তবে শতভাগ অর্জন হয়নি। পানির সরবরাহ নিশ্চিত না হলে কিশোরীদের বড় দুটি সমস্যায় পড়তে হয়। একটি হলো, মাসিকের দিনগুলোতে উপস্থিতি কমে যায়। এ জন্য উপবৃত্তির থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে তাদের।
ওয়াটার এইডের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রধান খায়রুল ইসলাম বলেন, স্কুলগুলোতে সুপেয় পানি প্রাপ্তি বেড়েছে। কিন্তু পাহাড়, উপকূলসহ দুর্গম এলাকার স্কুলে নিশ্চিত করা যায়নি। জাতীয় গড় হার দিয়ে তা বিবেচনা করা যাবে না। এ অঞ্চলগুলোয় বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মীর আব্দুস শহীদ বলেন, জেএমপির প্রতিবেদন নিয়ে ভিন্নমত নেই। করোনার কারণে পিছিয়ে গেছি। তবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সুপেয় পানি সরবরাহ আমাদের অঙ্গীকার। তা আমরা বাস্তবায়ন করছি।