১০ মাসের পিটিবিটি কোর্সই চালু থাকছে প্রাথমিকে
দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের দেড় বছরের ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) কোর্স বাতিল করে ১০ মাস মেয়াদি প্রাইমারি টিচার বেসিক ট্রেনিং (পিটিবিটি) কোর্স চালুর সিদ্ধান্ত আপাতত বহাল থাকছে। আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত হাইকোর্টের আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
রবিবার (০৭ মে) আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দিয়েছেন।
এদিন আদালতে আপিল আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। আর রিটের পক্ষে আদালতের শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।
এর আগে বিগত ২০২২ সালের ২২ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত ‘পরিমার্জিত প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ শিক্ষাক্রম স্টিয়ারিং কমিটির’ দ্বিতীয় সভায় কয়েকটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এগুলো হলো: ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশনের (ডিপিএড) নাম পরিবর্তিত হয়ে প্রাইমারি টিচার বেসিক ট্রেনিং (পিটিবিটি) হবে। কোর্সের মেয়াদ ১৮ মাসের পরিবর্তে ১০ মাস হবে; যা ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছিল।
তবে, একই বছরের ১৯ ডিসেম্বর ‘পরিমার্জিত প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ শিক্ষাক্রম স্টিয়ারিং কমিটির’ সভায় প্রশিক্ষণের মেয়াদ ১০ মাস করার সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে ৬ মাস প্রশিক্ষণ হবে পিটিআইয়ে এবং বাকি ৪ মাস প্র্যাকটিস টিচিং। ওই ৪ মাসের প্রশিক্ষণ বিদ্যালয়ে হবে।
শিক্ষা প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলোতে (পিটিআই) নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এই সিদ্ধান্তকে আইনের লঙ্ঘন উল্লেখ করে তাদের পক্ষ থেকে গত ১৮ ডিসেম্বর আইনি নোটিশ দেওয়া হয়।
ওই নোটিশের পর কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় বাংলাদেশ পিটিআই কর্মকর্তা সমিতির আইন সম্পাদক ও ফেনী পিটিআইয়ের ইনস্ট্রাক্টর (বিজ্ঞান) মোহাম্মদ জাকির হোসেন গত ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুর দিকে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন।
রিটের শুনানি নিয়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের দেড় বছরের ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) কোর্স বাতিল করে ১০ মাস মেয়াদি প্রাইমারি টিচার বেসিক ট্রেনিং (পিটিবিটি) কোর্স চালুর বিষয়টি ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ ওই আদেশ দেন।
রুলে প্রাইমারি টিচার বেসিক ট্রেনিং (পিটিবিটি) কোর্স পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না—তা জানতে চাওয়া হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন ফকির। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শুভ্র বসু। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
পরে আইনজীবী শুভ্র বসু জানিয়েছিলেন, ২০২২ সালের ২২ নভেম্বর এবং ১৯ ডিসেম্বর ‘পরিমার্জিত প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ শিক্ষাক্রম স্টিয়ারিং কমিটি’র গ্রহণ করা সিদ্ধান্ত ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এরপর হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আপিল বিভাগে আবেদন জানায়।