ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস চলাকালেই পলেস্তরাসহ খুলে পড়ল ফ্যান
পটুয়াখালীর দুমকিতে ৫৩নং পশ্চিম জলিশা সরকারি প্রাথমিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৭৫ সালে। এরপর আর খুব বেশি হয়নি সংস্কার; ফলে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে অনেকটা বাধ্য হয়েই পাঠদান করতে হয় শিক্ষকদের। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করলেও তেমন কোন পদক্ষেপ নেননি তারা।
এর মধ্যেই বুধবার (২৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রথম শ্রেণির ক্লাস চলাকালীন সময়ে পলেস্তারাসহ ফ্যান খুলে শ্রেণি কক্ষের মেঝেতে পড়েছে। এতে শ্রেণি শিক্ষক দলিল উদ্দিন সামান্য আহত হলেও তেমন কোন ক্ষতি হয়নি খুদে শিক্ষার্থীদের। এসময় শিক্ষার্থীরা ভীষণভাবে আতঙ্কিত হওয়ার পাশাপাশি ভয় পেয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওই শ্রেণিতে বীমের পলেস্তারা খসে পড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। খুলে পড়া ফ্যানটিও মেঝেতে পড়ে আছে। এছাড়াও ভবনের বিভিন্ন কক্ষ, বারান্দা, সিঁড়ি ও ভবনের বাহিরে বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারা খসে পড়ে গেছে। মরিচা ধরা লোহার রড দেখা যাচ্ছে।
২৮ শতক ভূমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়ে একটি জীর্ণশীর্ণ ভবন রয়েছে। ১৯৯৪ সালে এলজিআরডি'র সহায়তায় বিদ্যালয়টি পুনঃনির্মাণ করা হলেও কাজের মান নিম্ন হওয়ায় ২৯ বছর যেতে না যেতেই বেহাল দশায় উপনীত হয়েছে। এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় অভিভাবকবৃন্দ তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। কেউ কেউ তাদের সন্তানদের অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, প্রায়ই তাদের শ্রেণিকক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে গায়ের ওপর পড়ে। তারা ঝুঁকি নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে ক্লাস করার কারণে পাঠদানে মনোযোগ দিতে পারছে না। এসময় শিক্ষার্থীরা দ্রুত তাদের বিদ্যালয়ে একটি অত্যাধুনিক নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানায়।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দলিল উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে তিনি প্রথম শ্রেণিতে পাঠদান করাচ্ছিলেন। হঠাৎ ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে। এতে খুদে শিক্ষার্থীরা ভয়ে চিৎকার শুরু করে।
সহকারী শিক্ষক কবিতা রানী বলেন, বিদ্যালয়ের জন্য নতুন ভবন নির্মাণ, শ্রেণিকক্ষসহ পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা বাড়লে শিক্ষার মান আরও ভালো হবে। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের কোনো সীমানা প্রাচীর না থাকায় শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিতে আছে।
এ নিয়ে প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারা বেগম বেগম জানান, বৃহস্পতিবার প্রথম শ্রেণির কক্ষে পাঠদানের সময় পলেস্তারা খসে পড়ার ঘটনাটি তিনি তাৎক্ষণিক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করেছেন। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশুদের পাঠদান করাচ্ছেন। জরুরি ভিত্তিতে জমি সংক্রান্ত জটিলতা দূর করে বিদ্যালয়ের ভবনসহ বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের দাবি জানান তিনি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. কাজী মনিরুজ্জামান রিপন ভবনটির দুরবস্থার কথা স্বীকার করে ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিদ্যালয়ের জীর্ণশীর্ণ ভবনের ছবি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অধিদপ্তর থেকে বরাদ্দ পেলে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে।