প্রাথমিক শিক্ষকদের উচ্চতর ডিগ্রি অন্তর্ভুক্ত হবে সার্ভিস বুকে
অবশেষে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হল। এখন থেকে তাদের সার্ভিস বুকে উচ্চতর শিক্ষাগত ডিগ্রি যুক্ত হবে। আজ মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে।
আদেশে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ সাধারণত চাকরিতে যােগদানকালে যে সকল সার্টিফিকেট জমা দেন তা সার্ভিসবুকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং নিয়ােগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে শিক্ষাগত যােগ্যতা/প্রশিক্ষণ অর্জন করলে তাও সার্ভিসবুকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু অনেক শিক্ষক অধ্যয়নরত থাকাকালীন চাকরিতে যােগদান করেছেন এবং পরবর্তীতে চাকরিরত অবস্থায় অধ্যয়ন সম্পন্ন করেছেন। এছাড়াও, অনেক শিক্ষক নৈশকালীন/খন্ডকালীন কোর্স সম্পন্ন করেছেন কিন্তু অসচেতনতার কারণে কর্তৃপক্ষের অনুমােদন গ্রহণ করা হয়নি। কর্তৃপক্ষের অনুমােদন ব্যতিরেকে যদি কোন শিক্ষক শিক্ষাগত যােগ্যতা/অভিজ্ঞতা অর্জন করে থাকেন তবে উক্ত যােগ্যতা/অভিজ্ঞতা সার্ভিসবুকে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়ােজন।
‘এমতাবস্থায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণের শিক্ষাগত যােগ্যতার সনদসমূহ যাচাই করে সার্ভিসবুকে অন্তর্ভুক্তকরণের প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরােধ করা হলাে। তবে, এখন থেকে শিক্ষাগত যােগ্যতা অর্জনের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের অনুমােদন গ্রহণ করতে হবে।’
সহকারী শিক্ষকরা জানান, আগে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের অ্যান্ট্রি পদে নারীদের জন্য উচ্চমাধ্যমিক ও পুরুষদের জন্য স্নাতক ডিগ্রি যোগ্যতা নির্ধারণ করা ছিল। এই পদে ৬০ শতাংশ শিক্ষকই আবার নারী। তাই নারী শিক্ষকের বড় অংশই উচ্চমাধ্যমিক পাস করে এই চাকরিতে আসেন। পরে অনেকে ডিগ্রি ও মাস্টার্স করেন।
সহকারী শিক্ষকদের নতুন নিয়োগ বিধি-২০১৯ অনুযায়ী, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে কমপক্ষে দ্বিতীয় শ্রেণির স্নাতক ডিগ্রি। তাই স্নাতক হয়েও অনেক নারী শিক্ষক সরকারি কাগজে-কলমে এখনও উচ্চমাধ্যমিক পাস। এ কারণে সম্প্রতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের জাতীয় বেতন স্কেলের ১৩তম গ্রেডে উন্নীত করা হলেও এই শিক্ষকরা সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এই বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, চাকরিকালীন অর্জিত সার্টিফিকেটগুলো অন্তর্ভুক্তকরণের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো শতভাগ স্নাতক ডিগ্রিধারী শিক্ষক পেল। এই আদেশের মাধ্যমে প্রায় দেড় লাখ শিক্ষক তাদের অনুমতি ছাড়া অর্জিত সার্টিফিকেট সার্ভিস বুকে অন্তর্ভুক্ত করার সুবিধা পাবেন।