গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা
সমাপনী পরীক্ষায় শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণে নতুন মাত্রা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ জুন ২০১৮, ০৬:৩১ PM , আপডেট: ১০ জুন ২০১৮, ০৭:৫১ PM
প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা চালুর ফলে প্রাথমিক শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ নতুন মাত্রা পেয়েছে। প্রাইভেট ও কোচিং ব্যবসার সঙ্গে বেড়েছে ‘পাঠ্যবই সহায়ক পুস্তিকার’ নামে গাইড বই ব্যবসার। এ পরীক্ষার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের উপর। স্কুলের শিক্ষকরা স্কুলের কোচিং এ যেতে বাধ্য করছে। আবার নিজের কাছে বাসায় গিয়ে পড়তে যেতেও নানা ভাবে চাপ দিচ্ছে। এ পরীক্ষা অভিভাবকদেরও এক অসুস্থ প্রতিযোগিতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি (ডিআরইউ) এর সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বাতিল ও প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে করণীয়’ র্শীষক এ গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বক্তারা। সমাজতান্ত্রিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটি এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।
সংগঠনের সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্তী রিন্টুর সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন ব্যারিষ্টার জ্যোতির্ময় বড়–য়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা ঋতু, ধানমন্ডির ঝিগাতলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ইসহাক সরকার, শিশু ও শিক্ষা রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক লেখক রাখাল রাহা, প্রযুক্তিবিদ দিদারুল ভ‚ইয়া, ভিকারুন্নেসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের অভিভাবক দিলারা চৌধুরী প্রমুখ।
ব্যারিষ্টার জ্যোতির্ময় বড়–য়া বলেন, প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা চালুর ফলে প্রাইভেট ও কোচিং ব্যবসা জমজমাট চলছে। বেড়েছে ‘পাঠ্যবই সহায়ক পুস্তিকার’ নামে গাইড বই ব্যবসার। এতে প্রাথমিক শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ নতুন মাত্রা পেয়েছে। সৃজনশীল প্রশ্ন করার ফলে শিক্ষকরা নানা রকমের প্রশ্ন পরীক্ষায় দেবার সুযোগ পাচ্ছে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় রকমের কঠিন প্রশ্নও স্কুলের পরীক্ষায় দেওয়া হচ্ছে যাতে তার কাছে প্রাইভেটে পড়তে বাধ্য হয় শুধু শিশুদের নয়, এই পরীক্ষা অভিভাবকদেরও এক অসুস্থ প্রতিযোগিতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
মোশাহিদা সুলতানা ঋতু বলেন, এ পরীক্ষা কোমল শিশুদের শৈশবকে ধ্বংস করছে। ফলে এ পরীক্ষা বাতিলের দাবি যথার্থ। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের ভ‚মিকা গুরুত্বপূর্ণ। বাজেটে যে বরাদ্দ দেয়া হয় তার অধিকাংশই ব্যয় হয় অবকাঠামো খাতে। প্রাথমিক মাধ্যমিক শিক্ষকদের বেতন খুব কম। তাদের বেতন বাড়ানো প্রয়োজন। অন্যদিকে এ ধরনের শিক্ষা-শিক্ষার নৈতিক ভিত্তি ধ্বংস করছে। শিক্ষা সম্পূর্ণ সার্টিফিকেটমুখী হয়ে পড়েছে।
দিলারা চৌধুরী বলেন, একজন মা কতটা অসহায় হলে প্রতিবাদী হয়। স্কুলেতো আজ শিক্ষা দেয়া হয় না, ব্যবসা হচ্ছে। স্কুলে পড়ানো হচ্ছে না বলে বাধ্য হয়ে কোচিয়ে দেই। বারবার সিলেবাস পরিবর্তন করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তগুলো নেবার আগে তো একবার বাচ্চাদের ভবিষ্যতের কথা ভাবা দরকার। কোচিং, পরীক্ষার চাপ সবসময়-এটা শিশুর জীবন নাকি কারাগার।