স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির মুখপত্রে পরিণত হয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন: ছাত্রলীগ

ছাত্রলীগ-ছাত্র ইউনিয়ন
ছাত্রলীগ-ছাত্র ইউনিয়ন  © লোগো

স্বাধীনতা সংগ্রামে গৌরবান্বিত ভূমিকা পালন করা ছাত্র ইউনিয়ন বর্তমানে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির মুখপত্রে পরিণত হয়েছে বলে দাবি করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রী। ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের একটি বক্তব্যকে কুরুচিপূর্ণ ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রচারণা এবং বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিচ্যুত এক শিক্ষকের মিথ্যাচারকে ‘রাষ্ট্রীয় বিতর্কিত বিষয়’ বলে উল্লেখ করার মাধ্যমেই এটি প্রমাণিত হয়। আজ সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থ স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবাদে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক প্রতিটি সংগ্রামে এক প্রবাদপ্রতিম সংগঠন। এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একটি পরিপূরক নাম। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেই ধারাবাহিকতার গর্বিত উত্তরাধিকার। স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী প্রতিটি আন্দোলনের বিপ্লবী ভূমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা প্রতিবার তাদের জীবনকে উৎসর্গ করেছে অহংকারের সাথে, হাসিমুখে।

প্রতিবাদে আরও বলা হয়, ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের একটি বক্তব্যকে হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে কুরুচিপূর্ণ ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে রঙ মাখিয়ে বিভ্রান্তিকর যে প্রচারণা বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের নামে প্রচারিত হয়েছে, তা ছাত্র ইউনিয়নের গৌরবজনক ঐতিহাসিকতার হতাশাজনক পরিণতি বলে আমরা মনে করি। আমরা উদ্বেগের সাথে আরও মনে করি, সাম্প্রদায়িক-প্রতিক্রিয়াশীল, স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্ঠীর কাছে ছাত্র ইউনিয়নের বর্তমান নেতৃত্ব তাদের সংগঠনকে যেভাবে লজ্জাজনক ইজারা ও দখলদারিত্ব প্রদান করেছে সাম্প্রতিক যৌথ বিবৃতি তারই প্রমাণ বহন করে।

“স্বাধীনতা সংগ্রামে গৌরবান্বিত ভূমিকা পালন করা ছাত্র ইউনিয়ন যে বর্তমানে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির মুখপত্রে পরিণত হয়েছে তা প্রমাণ হয় একাত্তরের মহান স্বাধীনতার সংগ্রাম, ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের মিথ্যাচারকে ‘রাষ্ট্রীয় বিতর্কিত বিষয়’ বলে উল্লেখ করার মাধ্যমে। সাম্প্রতিক যৌথ বিবৃতি সেই ধারাবাহিকতারই আরেকধাপ পতন বলে আমরা মনে করি।”

প্রতিবাদে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই মিথ্যাচার ও বানোয়াট যৌথ বিবৃতিকে প্রত্যাখ্যানপূর্বক মনে করে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী ধর্ষিত হবার ঘটনায় আশ্চর্যজনকভাবে নীরব থেকে ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ ধর্ষকদের পক্ষে তাদের সাংগঠনিক অবস্থান প্রমাণ করেছে। পাশাপাশি ধর্ষকদের সাথে নিজেদের রাজনৈতিক মিত্রতাকে তারা ধর্ষিতার আর্তনাদের থেকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছে। যা এই সংগঠনের দেউলিয়াত্ব প্রমাণ করে।

“বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সবসময় ধর্ষণ, নারী নিপীড়ন ও নারীর মানবিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন হওয়ার বিপক্ষে সোচ্চার। বিপরীতে ছাত্র ইউনিয়ন ধর্ষণকারীদের পক্ষে নীরবতা পালন করে, ধর্ষণকারীদের সাথে রাজনৈতিক সমঝোতা গড়ে, আকারে-ইঙ্গিতে থেকে প্রকাশে ধর্ষণকারীদের বাঁচানোর চেষ্টা করে নিজেদের সাংগঠনিক অবস্থান পরিষ্কার করেছে। এমনকি নিজ সংগঠনের ভেতরে সংঘটিত নারী নির্যাতনের ঘটনারও কোন প্রতিকার পূর্বে তারা করেনি যার ফলশ্রুতিতে তাদের কেন্দ্রীয় অফিসে নির্যাতিতাকে অবস্থান ধর্মঘট পালন করতে হয়েছে।”

প্রতিবাদে আরও বলা হয়, সুষ্ঠু-স্বাভাবিক রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা, সহমর্মিতাকে পাশ কাটিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ কর্তৃক যে হীন প্রতিহিংসা দৃশ্যমান তা সামগ্রিক ছাত্র রাজনীতির জন্য নেতিবাচক বলে আমরা মনে করি। স্বাধীনতা বিরোধী, সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী, ধর্মীয় উগ্র গোষ্ঠীর সমার্থক হয়ে পরিচালিত ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের এমন কর্মকাণ্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কোনভাবেই মেনে নিবে না।


সর্বশেষ সংবাদ