৭২ ঘণ্টা বাড়িয়েও প্রতিবেদন দিতে পারেনি তদন্ত কমিটি
৭২ ঘণ্টা বাড়িয়েও নির্ধারিত সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সদ্য সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ও বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহবায়ক হাসান আল মামুনসহ সংগঠনটির ৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ধর্ষণের সহযোগিতার অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। আজ সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা থাকলেও তা দিতে পারেনি ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি।
আজ সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তদন্ত কমিটির সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত সংগঠনের সাবেক আহবায়ক হাসান আল মামুন ছাড়া সকলের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। মামুনের সঙ্গে আমরা কোনভাবেই যোগাযোগ করতে পারিনি। এছাড়া তাকে কোথাও খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্য আজ সোমবার সন্ধ্যায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা থাকলেও দিতে পারছি না।
তিনি বলেন, আমরা অভিযোগকারী ছাত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছি। আমরা তাকে জিজ্ঞেস করেছি তার আর কোন অভিযোগ আছে কিনা? তিনি আমাদেরকে তার দেয়া থানার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করতে বলেছেন। আমরা সকল প্রস্তুতি শেষ করে আগামীকার মঙ্গলবারের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবো।
তদন্তের বিষয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, তদন্ত কমিটি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কমিটি স্বাধীনভাবে কাজ করছে। এক্ষেত্রে কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। সেটা আমিও না।
তিনি বলেন, যাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারা স্বাধীন এবং নিরপেক্ষভাবে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করবে। তদন্ত শেষে আপনারা জানতে পারবেন।
এর আগে মূল আসামি মামুনকে সংগঠন থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দিয়ে বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল সংগঠনটি। ৪৮ ঘন্টা সময় নিয়ে তদন্ত প্রতিবেন গত শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে দেয়ার কথা থাকলেও ৭২ ঘন্টা সময় বাড়িয়ে আজ সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা ছিল।
এই তদন্ত কমিটিতে ছিলেন রয়েছেন-পরিষদের ঢাবি সভাপতি বিন ইয়ামিন ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক তারেক রহমান এবং রাফিয়া সুলতানা।
নুর-মামুনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কোতওয়ালী থানায় একটি করা হয়। তার আগে রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, সহায়তা ও হুমকির অভিযোগে এদের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় প্রথম মামলাটি করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ইসলামিক স্টাডিজ পড়ুয়া এক ছাত্রী ওই মামলা করেন। তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রী। লালবাগ থানার মামলার বর্ণনায় ওই ছাত্রী হাসান আল মামুনের সঙ্গে প্রেম ও প্রণয়ের কথা জানিয়ে বিয়ে নিয়ে টালবাহানার অভিযোগ তুলেছেন।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক নাজমুল হাসান, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. নাজমুল হুদা ও মো. আবদুল্লাহ হিল বাকী। একই তরুণীর করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার মূল আসামি পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক নাজমুল হাসান।
আর তিন নম্বর আসামি নুরুল হক নুর। বাকিরা হলেন আহবায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহবায়ক মো. সাইফুল ইসলাম, মো. নাজমুল হুদা ও মো. আবদুল্লাহ হিল বাকী।
মামলায় বিবরণে বলা হয়েছে, কতোয়ালি এলাকার সদরঘাট হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে এ ঘটনা ঘটেছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টা ৪০ থেকে রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে ঘটনার তারিখ ও সময় উল্লেখ করা হয়েছে।