‘নারীর প্রতি খারাপ চোখে তাকানোর মতো একটি কর্মীও ছাত্রলীগে নেই’
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেছেন, ধর্ষণ তো দূরের কথা নারীদের কটাক্ষ করা বা খারাপ চোখে তাকানোর মতো একটি কর্মীও ছাত্রলীগে নেই। রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজুভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
লেখক ভট্টাচার্য বলেন, সিলেটের মুরারীচাঁদ (এমসি) কলেজে যে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে সেখানে সবার আগে ছাত্রলীগের নেতৃত্বেই আন্দোলন হয়েছে। এই ঘটনার বিচারের জন্য সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। যারা আন্দোলন করছে, তারাই ছাত্রলীগের কর্মী; যারা ধর্ষণ করে, তারা ছাত্রলীগের কেউ নয়। ছাত্রলীগ আছে বলেই স্বাধীনতাবিরোধীরা গলা উঁচু করে কথা বলতে পারে না।
ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, গত কয়েক দিনে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যেসব ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটেছে এসব ঘটনায় যারা জড়িত তাদেরকে বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করার জন্য আমাদের এই বিক্ষোভ। আমরা চাই, তাদের শাস্তির মাধ্যমে যেন দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়। দুষ্কৃতিকারীরা যাতে অপকর্ম করার সাহস না পায়। সেজন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে নাট্যকার ও নাটকবাজ আখ্যায়িত করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের বিচার না পেয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরবে, তা হতে পারে না। এর বিচার হতে হবে। এ সময় তিনি নুরদের সংগঠনকে ‘ধর্ষণ অধিকার পরিষদ’ হিসেবে উল্লেখ করে তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়ার আহ্বান জানান।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, আইনজীবী কামাল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে যেখানেই দেখবেন, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষণগুলোর বিচার না হলে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে সারা বাংলাদেশ অচল করে দেব।
বিক্ষোভ সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সদ্য সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, 'ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড চাই— শুধু এটুকু বলেই আত্মতৃপ্ত হওয়ার সুযোগ নেই।
বরং নারীর ওপর অপরাধের শর্ত তৈরি করে যে সমাজ, সেই সমাজকে ছিন্নভিন্ন করে দিতে হবে।' নুরুলকে 'ডাকসুর সাবেক নাট্যকার' আখ্যায়িত করে সাদ্দাম বলেন, 'গণমাধ্যমের বন্ধুদের বলব, আপনারা সিলেকটিভ নৈতিকতা না দেখিয়ে নৈর্ব্যক্তিক নৈতিকতা দেখান। সবার ব্যাপারেই যেন আপনাদের সমান চোখ থাকে। সিলেটের এমসি কলেজের ঘটনা পত্রিকায় লিড হবে আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনা ভিন্নভাবে উপস্থাপিত হবে, তা হতে পারে না। বিশেষ করে ডাকসুর সাবেক নাট্যকারের বক্তব্য-কর্মসূচিগুলোর ডেবিট-ক্রেডিট মিলছে না, ব্যালেন্সশিট সমান থাকছে না—গণমাধ্যমের বন্ধুরা বিষয়টি উপস্থাপন করুন।'