বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই ছাত্রলীগ বেপোরোয়া: সুজন

ধর্ষণের বিচার দাবি উত্তাল হয়ে উঠেছে সিলেটের এমসি কলেজ ক্যাম্পাস
ধর্ষণের বিচার দাবি উত্তাল হয়ে উঠেছে সিলেটের এমসি কলেজ ক্যাম্পাস  © সংগৃহীত

অপরাধীদের বিচার না হওয়ায় সিলেটে ছাত্রলীগ বেপোরোয়া হয়ে ওঠেছে বলে মনে করেন সুশাসনরের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেট শাখা। সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় আজ শনিবার গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে এমনটিই জানিয়েছে সংগঠনটি।

সংগঠনটির সিলেটের আহ্বায়ক ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এর আগেও আমরা দেখেছি ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজ ছাত্রবাস পুড়িয়ে দিয়েছে। টিলাগড় এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একের পর এক হত্যাকান্ড চালিয়েছে ছাত্রলীগ। কিন্তু এসবের একটিরও আজ পর্যন্ত বিচায় হয়নি। আসামীরা চিহ্নিত হয়নি। ফলে তারা দিন দিন বেপোরোয়া হয়ে ওঠেছে।

অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি করে তিনি বলেন, এই বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই আজকের এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। কলেজ ছাত্রবাসে স্বামীর সামনে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করেছে। পূর্বের ঘটনার মতো এ ঘটনাও যাতে ধাপাচাপা পড়ে না যায়, আসামীরা রেহাই পেয়ে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ধর্ষকদের অবশ্যই শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

তবে এমসি কলেজের ঘটনায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির  কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কমিটির সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়। তিনি বলেছেন, আপনারা দেখেছেন অনেক সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করেও অনেকে অনেক ধরনের অপকর্ম করেছে। এসব সুবিধাভোগীরা সংগঠন কিংবা দলের নাম ভাঙিয়ে অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।

জয় বলেন, এমসি কলেজের ঘটনায় আমরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছি। এ ঘটনায় যারা অভিযুক্ত তাদের কারো ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কোন পদ-পদবী নেই। সেখানে ৭ বছর ধরে সংগঠনটির কোন কমিটিও নেই।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার বিকেলে স্বামীর সাথে এমসি কলেজে বেড়াতে গিয়েছিলেন এক তরুণী। সন্ধ্যায় তাদের কলেজ থেকে ছাত্রাবাসে ধরে নিয়ে আসে ছাত্রলীগের ৫/৬ জন নেতাকর্মী। এরপর দুজনকে মারধর করে স্বামীর সামনেই স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে তারা। রাতে ছাত্রাবাস থেকে এই দম্পত্তিকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীকে ওসমানী হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় শনিবার সকালে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ২/৩ জনের বিরুদ্ধে শাহপরাণ থানায় মামলা করেন ধর্ষিতার স্বামী।

এদিকে এ ঘটনার বিচার দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে সিলেটের এমসি কলেজ ক্যাম্পাস। আজ শনিবার দুপুরে ক্যাম্পাসসংলগ্ন সিলেট-তামাবিল সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এসময় তারা ধর্ষণকারীদের বিচার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার জ্যোর্তিময় সরকার বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ছাত্রাবাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সাথে কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ছাত্রাবাস ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা। পুলিশ এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। শুক্রবার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ছাত্রাবাসের সাইফুর রহমানের রুম থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, ধারালো অস্ত্র ও ছোরা উদ্ধার করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ