স্নায়ুযুদ্ধে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ

আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ লোগো
আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ লোগো  © টিডিসি ফটো

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মধ্যে দিয়ে চলছে রাজশাহীর রাজনীতি। বৃহস্পতিবার থেকে জেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের মধ্যকার এই স্নায়ুযুদ্ধ উত্তপ্ত রেখেছে জেলার ভার্চুয়াল রাজনীতি। পুঠিয়া উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এস আর মিঠুকে নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট থেকে এ পরিস্থিতির সূত্রপাত হয়েছে বলে জানা গেছে।

এস আর মিঠু বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজশাহী পুঠিয়া শাখা কমিটিতে ২০১৭ সালের ১২ জুন সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হন। তার বিরুদ্ধে দারার অনুসারীদের অভিযোগ, তিনি বিবাহিত ছাত্রলীগের কমিটিতে থেকে সংগঠনটিকে কলুষিত করেছে। তারা মিঠুর পদত্যাগ চান। এদিকে বৃহস্পতিবার থেকেই এসব বিষয় নিয়ে জেলা ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে ফেসবুকে বাকযুদ্ধ চলছে।

জানা গেছে, আব্দুল ওয়াদুদ দারা ২০১৯ সালের ৮ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। এরপরে ২০০৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরের নির্বাচনেও দারা বিপুল জনপ্রিয়তার মধ্য দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

প্রথমে সাবেক এমপি ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারার অনুসারী মারুফ হাসান রনি এস আর মিঠুকে নিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, “উনি হলেন এস আর মিঠু। পেশা হিসাবে একজন সুদখোর, নুরুল হত্যা মামলার আসামী ও পুঠিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের বিবাহিত সভাপতি। আমিও জাতির কাছে জানতে চাই, এ কেমন যোগ্যতা বা গুণাবলীর কারণে কে তাকে ছাত্রলীগের মত শক্তিশালী সংগঠনের সভাপতি করেছেন?”

এ পোস্টের জবাবে পুঠিয়া উপজেলা শাখার ছাত্রলীগের সভাপতি এস আর মিঠু ফেসবুকের এক পোস্টে লিখেছেন, “টাকা থাকলে সব সম্ভব। জনগণের টাকা আত্নসাত করে সেই টাকা দিয়ে সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারা আজ সে রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। কমিটি থেকে বাদ পড়েছে দলের ত্যাগী নেতারা। উনি হলেন সেই দারা, যিনি টাকা খেয়ে কমিটিতে পদ দিয়েছেন। ইনি হলেন সেই দারা, যিনি কিছুদিন আগেও টাকা খেয়ে বিএনপি-জামায়াতকে চাকরি দিয়েছেন।”

এরপর সাবেক এমপি ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারার অনুসারী শফি মিঠুুকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে লিখেছেন, পুঠিয়া উপজেলা ছাত্রলীদের বিতর্কিত সভাপতি মিঠুকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কারের দাবি সাবেক ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের।

তিনি লিখেন, রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক ও দুর্গাপুর-পুঠিয়া সংসদীয় আসনের দুই বারের সাবেক সফল সংসদ সদস্য জননেতা মো. আব্দুল ওয়াদুদ দারা ভাইয়ের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে ফেসবুকে অপপ্রচার চালিয়েছে বিতর্কিত ছাত্রলীগ নেতা মিঠু।

এদিকে পুঠিয়া উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এস আর মিঠুর বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা এবং বানোয়াট বলে দাবি করেছেন তিনি। তিনি জানান, তার ব্যক্তিগত ইমেজ ধ্বংস করতে তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করা হচ্ছে। ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার অনেক পরে তিনি বিবাহ করেছেন। এতে সংগঠনের কোন সমস্যা হবে না বলে তিনি জানান।

বর্তমান উদ্ভব পরিস্থিতির সম্পর্কে মিঠু জানান, প্রথমে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলে তিনিও তার আত্মপক্ষ সমর্থনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের অবস্থান পরিস্কার করেছেন। তবে শিগগিরই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে মত মিঠুর।

হঠাৎ করে জেলার শাখার রাজনীতির মধ্যে এমন পরিস্থিতির উদ্ভব কেন, এ ব্যাপারে আব্দুল ওয়াদুদ দারা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, মিঠু ছাত্রলীগের একজন নেতা। তার কারণেই এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আমরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেবো। এছাড়া আমারা জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেই দলীয় ব্যবস্থা নেবো।


সর্বশেষ সংবাদ