মুক্তিযোদ্ধারা কখনো ধর্ষক হতে পারে না: ভিপি নুর

  © ফাইল ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, নেত্রকোনার মারুফা হত্যার অভিযুক্ত চেয়ারম্যান নাকি মুক্তিযোদ্ধা! আমি মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই এই ধর্ষক ও খুনির সার্টিফিকেট বাতিল করতে হবে। একজন মুক্তিযোদ্ধাকে আমরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মনে করি, তাদের মুকুট মনে করি। তারা কখনো ধর্ষক হতে পারে না এবং এই ধর্ষক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।

রোববার (১৪ জুন) শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে লক্ষ্মীপুরের হিরামনি ও নেত্রকোনার বারহাট্টার মারুফাকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে এবং মারুফা ধর্ষণ ও হত্যার বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন নুর।

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার আয়োজনে এই মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়। মানববন্ধনে সংগঠনটির প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।

নুর বলেন, ধর্ষণের ঘটনা নতুন নয়, এটি ৬ মাস পর পর হবে ১ বছর পর পর হবে এমন নয়, প্রতিনিয়ত এসব ঘটনা ঘটছে, কোনটিরও বিচার হয়না। অনেক গরীব ও অসহায় মানুষ আছে যারা এসব গৃহ নির্যাতনের শিকার হয়। তাদের কোন মিডিয়া নাই, তাই মিডিয়াতে এসব আসে না, সেজন্য তারা বিচারের হাল ছেড়ে দেয়৷ ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে, টাকা পয়সা দিয়ে বিভিন্ন চাপ সৃষ্টি করে এসব ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে৷

প্রশাসনের উদ্দেশ্যে ভিপি নুর বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে যেমন দেশপ্রেমিক ও সৎসাহসী কর্মকর্তা রয়েছে তেমনি আবার কিছু দুর্নীতিবাজ, টাকার সাথে আপোষ করে অপরাধকে প্রশ্রয় দেয় সেই ধরনের কর্মকর্তাও কিন্তু দেখতে পাই। ফেনীর ওসি মোয়াজ্জেমের মত নেত্রকোনা ঘটনাকেও ধামাচাপা দেওয়ার মত গন্ধ পাচ্ছি। মারুফা হত্যা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক এক মাদ্রাসার ছাত্রকে আটক করেছে।

ভিপি নুর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘‘নেত্রকোনার কৃতিনসন্তান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক নির্যাতিত নেতা মো. সোহরাব হোসেনের নামে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ আমরা একটা কথাই বলতে চাই এসব অভিযোগ ও হামলা মামলার ভয় ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাদের দেখিয়ে লাভ নাই। আমরা মৃত্যুকে খুব কাছ থেকেই দেখে এসেছি, রাজপথ থেকে কখনো পালিয়ে যাইনি৷’’

অভিযোগ বিষয়ে মো. সোহরাব হোসেন বলেন, ‘‘মারুফা হত্যার অভিযুক্ত বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউপি চেয়ারম্যান কাঞ্চন ও চেয়ারম্যানের মদদদাতাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় মারুফার হত্যার বিচারের দাবিতে চলমান আন্দোলনকারীদের ভয় দেখিয়ে আন্দোলন বন্ধ করতেই মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই৷’’

ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক তারেক বলেন, যে আইসিটি আইনে আজ আওয়ামী লীগ সরকার মানুষকে হয়রানি করছে, সেই আইসিটি আইন তারা ক্ষমতা হতে চলে গেলেও এক বছর থাকা চাই। আমরা দেখব তখন তারা কি আচরণ করে। ধর্ষক চেয়ারম্যানকে নিয়ে সমালোচনা করায় একজন হাফেজকে গ্রেপ্তার দ্বারা সরকার যে ঘৃণ্য কাজ করল তার জন্য তাদেরকেও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হানিফ বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী, স্পিকার নারী, বিরোধীদলীয় নেত্রী নারাী। তারপরও ধর্ষণের বিচার হয় না, এর চেয়ে লজ্জা আর কি হতে পারে। তিনি আরও বলেন, এসব অপরাধীরা অপরাধ করারও পরও তাদের শাস্তি হয় না কারণ তারা ক্ষমতাসীনদের ছত্র ছায়ায় লালিত পালিত হয়।

মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগরের সমন্বয়ক মোল্লা রহমতুল্লাহ। মানববন্ধনে সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক মিনা আল আমিন৷


সর্বশেষ সংবাদ