ঢাবি শিক্ষার্থী পরশ যেভাবে যুবলীগের চেয়ারম্যান
আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের সদ্য চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন অধ্যাপক শেখ ফজলে শামস পরশ। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হলেও রাজনীতির মাঠে দেখা যেত না পরশকে। এমনকি ছোট ভাই তাপসের নির্বাচনী প্রচারেও তাকে খুব-একটা নামতে দেখা যায়নি। কিন্তু এবার ফুপুর নির্দেশ উপেক্ষা করতে না পেরে বাবার গড়া সংগঠনের দায়িত্ব নিতে হল তাকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে শেখ মনির বড় ছেলে ৫১ বছর বয়সী পরশ এতদিন রাজনীতি থেকে দূরেই সরিয়ে রেখেছিলেন নিজেকে। শিক্ষকতা নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির এই সাবেক ছাত্র।
জানা যায়, পঁচাত্তর ট্রাজেডিতে বাবা-মাকে হারানো পরশ-তাপসের বেড়ে ওঠা চাচাদের সঙ্গে। পরশের চাচা শেখ ফজলুল করিম সেলিম আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। তিনিও যুবলীগের চেয়ারম্যান ছিলেন। ক্যাসিনোকাণ্ডে পদ হারানো ওমর ফারুক চৌধুরীও পরশের ফুপা।
পরশ ধানমন্ডি সরকারি বালক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ঢাকা কলেজের থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো ইউনিভার্সিটি থেকে ডিগ্রি নেওয়ার পর দেশে ফিরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে আসছিলেন তিনি।
তথ্য মতে, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর যুবকদের সংগঠিত করার লক্ষ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গড়ে তুলেছিলেন ‘বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ’। তিনি সংগঠনটির দায়িত্ব দেন নিজের ভাগ্নে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শেখ মনিকে।
দুই বছরের মাথায় কংগ্রেসে শেখ মনিই যুবলীগের প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে শেখ মনি নিহত হওয়ার পর ১৯৭৮ সালে যুবলীগের পুনর্জাগরণে সংগঠনটির চেয়ারম্যান হন আমির হোসেন আমু। এরপর তৃতীয় কংগ্রেসে মোস্তফা মহসিন মন্টু, চতুর্থ কংগ্রেসে শেখ ফজলুল করিম সেলিম, পঞ্চম কংগ্রেসে জাহাঙ্গীর কবির নানক যুবলীগের চেয়ারম্যান হন। ২০১২ সালে ষষ্ঠ কংগ্রেসে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান ওমর ফারুক।
চেয়ারম্যানের পদ থেকে তার অস্বাভাবিক বিদায়ের পর নতৃন নেতৃত্ব গঠনে আয়োজিত কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশন শনিবার সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর বিকাল ৩টায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে বসে কাউন্সিল অধিবেশন, যাতে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কাউন্সিলের নেতৃত্ব নির্বাচনের অধিবেশনে কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান চয়ন ইসলাম পরবর্তী চেয়ারম্যান হিসেবে পরশের নাম প্রস্তাব করেন। তখন বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ তা সমর্থন করেন।
আর কোনো নামের প্রস্তাব না ওঠায় পরশের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এরপর তিনি নতুন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিখিলের নামও ঘোষণা করেন।