২৭ অক্টোবর ২০১৯, ১৬:০৮

কেন্দ্রের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সরব ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক রাজনীতি

২০১৬ সালের ২২ জুলাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলেও ভগির রাজনীতির রেশ কাটেনি এখনো। শাটলট্রেনের বগিতে রাজনীতি বন্ধ হলেও এখনো সক্রিয় বগিভিত্তিক গ্রুপগুলো।

ভর্তি পরীক্ষাকে ঘিরে বগির রাজনীতির বিষয়টি পুনরায় দৃষ্টিগোচর হওয়ায় কঠোর অবস্থানে যায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। গত ২২ অক্টোবর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের নির্দেশক্রমে দপ্তর সম্পাদক মো. আহসান হাবিব স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বগির নামে চিকা, পোস্টারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। কিন্তু কেন্দ্রের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিলো চবি ছাত্রলীগের বগি ভিত্তিক গ্রুপগুলো।

২২ অক্টেবরের বিবৃতিতে বলা হয়েছিল— ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববাদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের শাটল ট্রেনের বগি ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় বিভিন্ন বগির নামে চিকামারা, টি-শার্ট, প্ল্যাকার্ড, স্লোগান সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হলো। এবং শাখা ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মী এ আদেশ অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কিন্তু মাত্র ৫ দিন আগের কেন্দ্রীয় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বেশ কয়েকটি গ্রুপ নিজেদের নামে টি-শার্ট বানিয়ে ভিন্নভাবে কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়। ২৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ভগি ভিত্তিক গ্রুপগুলোকে পুরোনো রুপে দেখা যায়।

নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারী গ্রুপগুলোর মধ্যে রয়েছে- ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স), বিজয়, রেড সিগনাল (আর এস) এবং বাংলার মুখ। চারটি গ্রুপই তাদের টি শার্টগুলোতে গ্রুপের নাম উল্লেখ করেছে। এদিন টি-শার্ট গায়ে ভিন্ন ভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রমে অংশ নেয় তারা। এসময় তারা ছাত্রলীগের মূল ব্যানার থেকে বেরিয়ে নিজেদের গ্রুপের ব্যানারে পানি সরবরাহ ও শিক্ষা সামগ্রী বিতরন করেছে তারা।

বিজয় গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইলিয়াস বলেন, যারা সভাপতি-সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন তারাও বগির রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি। সিএফসি, সিক্সটি নাইনের চিকা এখনো দেখা যাচ্ছে ক্যাম্পাসে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশনার ব্যাপারে তিনি বলেন, টি-শার্টগুলো আগে থেকে তৈরি থাকায় তারা গায়ে দিয়েছে।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, বগিভিত্তিক গ্রুপের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে বগির নামে কেউ সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড করতে চাইলে সেটা পারবে। কিন্তু তারা বগির নামের সাথে ছাত্রলীগের লোগো ব্যবহার করেছে যেটা অপরাধ। আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাথে কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবো। সাবেক, অছাত্র এবং বহিস্কৃতদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে তারা কোথাও ছাত্রলীগের পদের পরিচয় দিতে না পারে। এমনটিই জানিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, বগি ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের নির্দেশনাটি দু’বছর আগেই দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশনা যারা মানছে না, তারা কিভাবে ছাত্রলীগ করে বা এর পেছনে কি উদ্দেশ্যে আছে- তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা যেহেতু একটি অভিযোগ পেয়েছি, শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।