নিজ দলের নির্মম গণপিটুনির শিকার যুবলীগ-কর্মী মহসিন (ভিডিও)
চট্টগ্রামে এক যুবলীগের কর্মীকে নির্মমভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর পাতায় পাতায় ঘুরছে হামলার ভিডিওটি। ভিডিওতে দেখা যায়, হামলাকারী দুর্বৃত্তের একটি দল দেশীয় কায়দায় লাঠিসোটা নিয়ে একজনকে বেধড়ক পেটাচ্ছেন। পরে স্থানীয়রা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
গতকাল রোববার বিকেলে নগরের আকবর শাহ থানার বিশ্ব কলোনি এলাকার এন ব্লকে এ ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার সকাল থেকে মহসিনকে পেটানোর দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে আজ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মারধরের শিকার মহসিন বিশ্বকলোনি এম ব্লকের বাসিন্দা। তিনি উত্তর পাহাড়তলি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সরওয়ার মোর্শেদ কচির অনুসারী।
গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন মো. সাজু, মো. তারেক, বেলাল হোসেন, মো. মিরাজ ও মো. মাসুদ। তাঁরা সবাই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন উত্তর পাহাড়তলি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জহুরুল আলম জসীমের অনুসারী বলে জানা গেছে।
পুলিশ বলছে, হামলাকারীরা সবাই যুবলীগের কর্মী। অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হাতে হামলার শিকার হন মহসিন। ঘটনার আগের দিন গত শনিবার তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর বিরুদ্ধে মারামারির তিনটি মামলা আছে। তিনি নগরের উত্তর পাহাড়তলি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সরওয়ার মোর্শেদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, একটি গলির মুখে যুবলীগের কর্মী মহসিনকে অতর্কিত এসে মারধর শুরু করে ৮ থেকে ১০ জনের একটি দল। তাদের কাছ থেকে মহসিন পালানোর চেষ্টা করলেও চারপাশ থেকে রড ও লাঠি দিয়ে তাঁকে পেটানো অব্যাহত থাকে। মারধর থেকে বাঁচতে মহসিন একজনের পা ধরে রাখেন। ওই যুবকের নাম চৌধুরী জুয়েল। পা ধরেও পিটুনি থেকে রক্ষা পাননি মহসিন। পরে মৃত ভেবে তাঁকে রেখে চলে যান হামলাকারীরা। ভিডিও ফুটেজ দেখে তুহিন, রাব্বী, পারভেজ, ফারহান ও খোকন নামে আরও কয়েকজনকে শনাক্ত করা গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন উত্তর পাহাড়তলি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জহুরুল আলম জসীম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মহসিনের লোকেরাই তাঁকে মারধর করেছেন।
সার্বিক বিষয়ে নগরের আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসীম উদ্দিন বলেন, এক যুবককে নির্দয়ভাবে পেটানোর ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জড়িত অন্যদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। নিজেদের মধ্যে কোন্দলের জেরে এই মারামারির ঘটনা। গ্রেপ্তার আসামি সাজুর কাছ থেকে ঘটনার সময় হাতে থাকা একটি লম্বা ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।