২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৩১

‘তুহিন ছাড়া কাউকে মানি না, মাঠেও থাকব না’— নীলফামারী-১ আসনে বিএনপি নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ারি

প্রকৌশলী তুহিনকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে ডিমলা ও ডোমারে বিক্ষোভ   © টিডিসি

সম্প্রতি নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী।

এ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে ডিমলা ও ডোমার উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তারা প্রকৌশলী তুহিন ব্যতীত অন্য কারো জন্য নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করা থেকে বিরত থাকার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। 

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিমলা উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ডিমলার স্মৃতি অম্লান চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে আলোচনা সভা, সংবাদ সম্মেলন এবং ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়।

এ সময় প্রতিবাদকারীরা আগুনের কুণ্ডলী জ্বালিয়ে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি জানান। একই দাবিতে ডোমার উপজেলাতেও পৃথকভাবে বিক্ষোভ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা“২, ৩ মানি না—১ ছাড়া বুঝি না”,“তুহিন ভাই এগিয়ে চলো, ডোমার-ডিমলা তোমার সাথে”ইত্যাদি শ্লোগান দেন।

আলোচনা সভা ও সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন এ আসনে মাঠপর্যায়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এবং তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে তার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তাকে বাদ দিয়ে জোটের প্রার্থী জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীকে মনোনয়ন দেওয়ার ঘোষণায় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

আরও পড়ুন: নীলফামারী-১ আসনে বিএনপি জোটের প্রার্থী কে এই মাওলানা আফেন্দী? 

বক্তারা আরও বলেন, গত ১৭ বছর ধরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। সেই ত্যাগ ও তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হলে তা মেনে নেওয়া হবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও ঘোষণা দেন তারা।

ডিমলা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য মো. গোলাম রব্বানী প্রধান বলেন, এই আসনে তুহিন ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর পক্ষে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মাঠে নামবে না। জেলা বিএনপির উপদেষ্টা অধ্যাপক আলহাজ্ব মো. রইছুল আলম চৌধুরী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে তুহিনকে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন না দিলে জোটের প্রার্থীকে বর্জনসহ কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবেন তারা।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কয়েকজন নেতাকর্মী প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে কাফনের কাপড় পরে মিছিলে অংশ নেন।

উল্লেখ্য, নির্বাচনী সমঝোতার অংশ হিসেবে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নীলফামারী-১ আসনসহ ৪টি আসন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশকে ছাড় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এই ঘোষণার পর থেকেই নীলফামারীর ডিমলা ও ডোমার উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছেন।