আন্দোলনের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ছাত্রলীগের
পদ বঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া নেতাকর্মীদের আন্দোলনের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। সোমবার দুপুরে সদ্য ঘোষিত কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটির নেতাদেরকে নিয়ে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।
এসময় কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাকর্মীরা ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন শাখার নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তবে আন্দোলনরত নেতাকর্মীদের কাউকে সেখানে দেখা যায়নি।
এর আগে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ ৩০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বাদ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান করবেন বলে ঘোষণা দেন ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা। দাবি না মানা হলে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনও সেখানে অবস্থান করবেন বলে তারা জানিয়েছেন।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রলীগের পদ বঞ্চিতরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে তাৎক্ষণিক সাংবাদিক সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। ছাত্রলীগে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে বিবাহিত, মাদকাসক্ত, অছাত্রদের-অনপুপ্রবেশকারীদের অবস্থান আছে অভিযোগ করে গত ১৩ তারিখ পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে দেওয়ার পর থেকে এই অংশটি আন্দোলন করছেন।
গতকাল রাতে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে যাওয়া হবে এমন খবরে তারা রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেন। সাংবাদিক সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগের গত কমিটির উপ দপ্তর সম্পাদক শেখ নকিবুল ইসলাম সুমন বলেন, ‘আমরা এখানে অবস্থান করব, ঈদ আমরা ঢাকায় করার প্রস্তুতি নিয়েছি। যদি আমাদের এই সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান না দেওয়া হয় তাহলে রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান করব। ঈদের দিন আমরা রাজু ভাস্কর্যে থাকব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি বিএম লিপি আক্তার বলেন, ‘আমি সবার সঙ্গে আছি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি না মেনে নেওয় হয় ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করব। আমাদের মূল দাবি হলো ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক মাদকাসক্ত, বিবাহিত, জামায়াত-শিবির পরিবারের যারা; তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান।’
তিনি বলেন, ‘১৭ জনের একটি লিস্ট দিয়েছেন। ১১দিন আগে তাদের নাম ঘোষণা করা হলেও তাদের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়নি এবং তাদেরকে নিয়ে আজকে ফুল দিতে যাচ্ছে ছাত্রলীগ। এই ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
লিপি আক্তার আরও বলেন, ‘ধানমন্ডির ৩২ নম্বর একটি পবিত্র জায়গা। সেখানে জাতির কলঙ্কিত যারা, তাদের নিয়ে কোনোভাবে ফুল দিতে যেতে পারে না। এটা আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। এসময় পাশে অবস্থান করা ছাত্রলীগের পদ বঞ্চিতরা ‘শেইম শেইম’ বলে নিন্দা জানান।
আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যে ১৭জন বিতর্কিত নেতাদের নাম গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছিলি এবং বলেছিল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। কিন্তু আজ ১১দিন অতিবাহিত হলেও এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
এসময় তারা অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নিজ থেকেই যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেগুলো তো রক্ষা করেইনি বরং আজ বিতর্কিতদের নিয়ে আমাদের প্রচণ্ড আবেগ অনুভূতির জায়গা বাঙালির জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে যাচ্ছে।
ধানমন্ডি ৩২ এর মত পবিত্র জায়গায় বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে গড়া সংগঠন ছাত্রলীগের ব্যানারে বিতর্কিত ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা নিবেদন বঙ্গবন্ধুকে অবমাননার শামিল বলেও মন্তব্য করেন তারা।