২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭:৫৭

এবার নিজ দল বিলুপ্ত করে ধানের শীষের প্রার্থী হলেন জাতীয়দলের হুদা

বিএনপিতে হুদাকে বরণ করে নিলেন মহাসচির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  © সংগৃহীত

১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিমের পর এবার বিএনপিতে যোগদান করে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হলেন ওই জোটের সমন্বয়কারী এবং বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা।

আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এ যোগদান অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির শরিকদের মনোনয়ন নিয়ে দর কষাকষির শেষ পর্যায়ে এই সিদ্ধান্ত নিলেন সৈয়দ এহসানুল হুদা। বিএনপিতে যোগদেয়ার মধ্যদিয়ে তিনি ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী-বাজিতপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিশ্চিত করলেন। যদিও গেল ৩ নভেম্বর প্রথম দফায় দলীয় প্রার্থী হিসেবে ওই আসনে মজিবুর রহমান ইকবালকে দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছিল বিএনপি।   

বিএনপি সূত্র জানায়, আসন্ন নির্বাচনে কোন ধরনের ঝুঁকি নিতে চায় না দলটি। ধানের শীষের প্রতীকের বাইরে জয়ী হওয়া অনেক কঠিন বলে মনে করছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। এই কারণে হাসিনা রেজিমে বিএনপির সঙ্গে দীর্ঘদিনের আন্দোলন সঙ্গী জোট নেতাদের নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভূগছিল বিএনপি। সেই কারণে কিছু ছোট ছোট দলের কাছে নিজ নিজ দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বিলীন হওয়ার ‘অপশন’ দেয় বিএনপি। আর সেই অপশনের কারণে সৈয়দ এহসানুল হুদা নিজ দল ‘বাংলাদেশ জাতীয় দলে’র চেয়ারম্যানের পদ থেকে অবশেষে পদত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দিলেন।

সৈয়দ এহসানুল হুদা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে আমি নির্বাচনে অংশ নিতে দীর্ঘদিন ধরে মাঠে কাজ করে আসছি। এলাকার জনগণ ও নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে প্রস্তুতি নিয়েছি। হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। বিগত হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনে একাধিকবার জেল-জুলুম সহ্য করেছি। নির্বাচন কমিশনের নতুন বিধির কারণে জোটের প্রার্থী হয়েও যার যার দলীয় প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বাধ্যবাধকতায় বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির একজন গর্বিত সদস্য হিসেবে ধানের শীষে নির্বাচন করব, ইনশাল্লাহ।

তিনি বলেন, বিএনপির আদর্শ ও আমার পূর্বের রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয় দলের একই আদর্শ ছিল। বাংলাদেশী জাতীয়তাব ও ধর্মীয় মূল্যবোধে আমরা একই আদর্শেরই রাজনীতি করেছি। এখন মূলধারা বিএনপিতে যোগ দিয়ে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের রাজনীতিকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করব।

এদিকে, বিএনপিতে যোগ দেয়া নবাগতদের অভিনন্দন জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদাসহ তার নেতা-কর্মীদের নিয়ে আজকে বিএনপির সঙ্গে যুক্ত হলেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের  বলিষ্ঠ নেতৃত্বে প্রতি আস্থা প্রকাশ করে এবং একই সঙ্গে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা কর্মসূচি এবং চেয়ারপাসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আস্থা রেখে তারা বিএনপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিলেন। আমরা আশা করছি, তাদের এই যোগদান বিএনপিকে আরও শক্তিশালী করবে।

সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, বিএনপি জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী দল। আমরা এই মুহুর্তে দেশের এই ক্রান্তিকালে গণতন্ত্রের পথে আমরা বিএনপিতে যোগ দিলাম। আজকে নির্বাচন বানচালের বিভিন্ন ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সেই মুহুর্তে আমি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউ র রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আমি আজকে আমার দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগদান করছি। আশা করছি, অতীতে যেভাবে রাজপথে সংগ্রাম করেছি, একটি সুন্দর বাংলাদেশ ৩১ দফার আলোকে বিনির্মাণের যে স্বপ্ন দেখছি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কিঞ্চিৎ ভূমিকা রাখতে পারব।

যোগদানের  এই অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।