২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯:৫৬

যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এমন সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান

তারেক রহমান  © সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমাদের সকলকে এখন ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শুধু বিএনপির নেতাকর্মীরাই নয়, অন্য দলের নেতাকর্মী-যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তাদেরও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

রবিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকালে বগুড়ায় শহীদ টিটু মিলনায়তনে জুলাই শহীদদের স্মরণে স্থাপিত ডিজিটাল স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শহীদ ওসমান হাদির স্মৃতিচারণ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আজকে এই যে শহীদ ওসমান হাদি শহীদ হয়েছেন, যে মানুষটি শহীদ হয়েছেন, এই মানুষটিও কিন্তু গণতন্ত্রের পথেই ছিলেন। এই মানুষটিও কিন্তু আগামী নির্বাচনের একজন প্রার্থী ছিলেন। অর্থাৎ উনি একজন প্রার্থী ছিলেন ঢাকা-৮ আসনের উনি প্রার্থী ছিলেন। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে শহীদ ওসমান হাদী নিজেও গণতন্ত্রের বা ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন। কাজেই আজকে শহীদ ওসমান হাদির প্রতি যদি সম্মান রাখতে হয় আমাদেরকে, আজকে আমাদের জুলাই শহীদদের প্রতি যদি সম্মান রাখতে হয়, জুলাই যোদ্ধাদের প্রতি যদি সম্মান রাখতে হয়, আজকে আমাদের ‘৭১ এর শহীদদের প্রতি যদি সম্মান রাখতে হয়, ৭১ এর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি যদি সম্মান রাখতে হয়, তাহলে আমাদের একটাই লক্ষ্য হতে হবে-দেশের মানুষের জন্য যেভাবে হোক শান্তি প্রতিষ্ঠা করা এবং দেশের জন্য কাজ করা। দেশকে সামনে নিয়ে যাওয়া।

তারেক রহমান বলেন, জুলাই শহীদদের স্মরণে স্থাপিত ডিজিটাল স্মৃতিস্তম্ভ। জুলাই আন্দোলনে আমরা আমাদের যে সকল ভাইদেরকে হারিয়েছি যারা, শহীদ হয়েছেন, স্বাভাবিকভাবেই তারা এই প্রজন্মের তরুণ সদস্য ছিলেন। এই প্রজন্মের বা এই যুগের অন্যতম আবিষ্কার বা অন্যতম খুব পপুলার একটি মাধ্যম হচ্ছে আইটি মাধ্যম। ইন্টারনেট যেটিকে আমরা বলি। স্বাভাবিকভাবে এই ইন্টারনেটের সঙ্গে আমাদের তরুণ প্রজন্ম যারা এখন তাদের একটা খুব নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে, কিন্তু এই ইন্টারনেটের একটি সমস্যা হয়তো রয়ে গেছে। সেটা হচ্ছে ব্যয়বহুল। সবার জন্য অনেক সময় এফোর্ড করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।

ইন্টারনেট সুবিধা তরুণদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার অঙ্গীকার করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আল্লাহর রহমতে আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি বাংলাদেশের মানুষের সমর্থনে ইনশাআল্লাহ সরকার গঠনে সক্ষম হলে আমরা এই ইন্টারনেট সেবাটাকে আরও ইজি করে আনতে চাই মানুষের জন্য। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য। যেমন আজ আজিজুল হক কলেজে যে কানেকশনটা দেয়া হয়েছে এটি ফ্রি কানেকশন। যে কোনো সদস্য এক থেকে দেড় ঘণ্টা ফ্রি ইন্টারনেট পাবে। এক দেড় ঘণ্টা পরে সেটা ডিসকানেক্ট হয়ে যাবে। তখন আবার নতুন করে সে ওটাতে লগইন করতে পারবে অর্থাৎ তার যতক্ষণ সময় সেটি করতে পারবে এবং এটির জন্য তাকে কোন পে করতে হবে না।

স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার নিয়ে তারেক রহমান বলেন, স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগের মাধ্যমে আমরা দেশে মোটামুটিভাবে পরিকল্পনা যে আমরা এক লাখ স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করতে চাই এই স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করে একদিকে যে রকম কর্মসংস্থান হবে আবার একইভাবে আমরা নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চাই। এক লাখের মধ্যে অন্তত ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ আমরা নারী স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করতে চাই।

দেশের আইটি পার্কগুলোর অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তারেক রহমান বলেন, গত স্বৈরাচারের আমলে জনগণের অর্থ তসরুপ করার মাধ্যমে তারা কতগুলো ডিজিটাল পার্ক তৈরি করেছে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কিন্তু ডিজিটাল পার্কগুলোর কিন্তু কোনো কাজ হয় না। এখানে ম্যাক্সিমাম বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। আমরা এগুলোকে পূণর্গঠন করবো। পূণর্গঠন করার মাধ্যমে আমাদের যে তরুণ সমাজের যারা সদস্য আছে. যারা অনলাইনে বিভিন্ন রকম কাজ করে কন্টেন্ট মেক করে অথবা ডিজাইনের কাজ করে-এই মানুষগুলোকে আমরা এখানে জায়গা করে দেব।

বিদেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি সম্পর্কে তারেক রহমান বলেন, আমরা তাদেরকে ভাষা শিক্ষা দেব। তাদেরকে বিভিন্ন প্রকার ট্রেনিং আমরা দেব, ওখানে সহজে যাতে সে চাকরি পেতে পারে। আমরা এভাবে পুরা পরিকল্পনা সাজাচ্ছি।

বক্তব্যের শেষে দলের ৩১ দফা ও নতুন স্লোগানের ওপর জোর দিয়ে তারেক রহমান বলেন, মূল কথা হচ্ছে আমাদেরকে এখন সামনে যেই সময় এসেছে, এই সময়ে আমাদের মূল কাজ একটাই-করবো কাজ গর্ব দেশ, সবার আগে বাংলাদেশ। এটাই হতে হবে আমাদের মূল লক্ষ্য। এটাই হতে হবে মূল টার্গেট।

অনুষ্ঠানে বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি জিয়াউল করিম বাদশার সভাপতিত্বে দলটির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।