খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়া বিলম্বিত হওয়ার কারণ জানালেন ডা. জাহিদ
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড আশাবাদী- এমনটাই জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বেগম খালেদা জিয়ার সবশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়ে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাত্রা বিলম্বিত হওয়ার কয়েকটি কারণ জানিয়েছেন চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, কাতারের আমিরের ব্যবস্থাপনায় আনা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল এবং একই সঙ্গে মেডিকেল বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে যে ওই মুহূর্তে তার ফ্লাই করা নিরাপদ হবে না। তিনি জানান, ভবিষ্যতে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থাই নির্ধারণ করবে কখন তাকে বিদেশে নেওয়া সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, তাই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চিকিৎসকদের মতামতিকেই প্রধান্য দিচ্ছেন এবং দলও বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে।
আরও পড়ুন: সেই চিকিৎসকের ১৭ বছরেও পদোন্নতি না হওয়ার নেপথ্যে কী
চিকিৎসা ও বিদেশে নেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে কোনো বিভ্রান্তিতে না পড়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, একজন অসুস্থ মানুষের পক্ষে টানা ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টার বিমানে ভ্রমণের ফলে শরীরে যেসব পরিবর্তন আসে, তা সহ্য করা সবসময় সম্ভব হয় না। তাই অনেকে দয়া করে গুজবে কান দেবেন না এবং কেউ বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করবেন না।
চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, সার্বিকভাবে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের মতোই রয়েছে। তাকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, বিদেশ নেওয়ার প্রস্তুতি সবসময়ই রয়েছে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সও প্রস্তুত। তবে নিরাপত্তা ও শারীরিক সুরক্ষার দিকটি বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। মেডিকেল বোর্ড তার শারীরিক অবস্থার দিকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।
মেডিকেল বোর্ডের সদস্য জাহিদ হোসেন জানান, দীর্ঘ ফ্লাইট ভ্রমণে সক্ষম না হওয়ায় খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা বিলম্বিত হচ্ছে। শনিবার বিকেলে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, শুক্রবারই তার যাত্রার কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়। আজ রোববার যাত্রার পরিকল্পনা থাকলেও সেটিও হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, গত ২৩ নভেম্বর থেকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। লিভার, কিডনি, ফুসফুস ও হৃদ্রোগের জটিলতায় তার অবস্থা সংকটাপন্ন। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড তার চিকিৎসা পরিচালনা করছে। খালেদা জিয়ার বড় পুত্রবধূ, মেডিকেল বোর্ডের সদস্য জুবাইদা রহমান শুক্রবার যুক্তরাজ্য থেকে ঢাকায় এসে চিকিৎসায় যুক্ত হয়েছেন; লন্ডন থেকেও তিনি নিয়মিতভাবে চিকিৎসা কার্যক্রমে ভূমিকা রাখছিলেন।