১১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:৩৫

দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ   © টিডিসি ফটো

জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারের উপদেষ্টারা বারবার বলছেন, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে। এছাড়া আগামী নির্বাচন স্মরণকালের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ, অবাধ, সুষ্ঠু হবে বলে বারবার ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। অপরদিকে সরকারের তথ্য উপদেষ্টা বলেছেন, প্রশাসনের সকল পদ বিএনপি জামাত ভাগাভাগি করে নিয়েছে। তাহলে এই ধরনের প্রহসনের প্রশাসন দিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে তা একজন শিশুও বিশ্বাস করে না। শনিবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে হাওলাদার টাওয়ারে জাতীয় যুব সংহতির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আমি অনেক জায়গায় বৈঠকে যাই, সেখানে রাজনীতিবিদসহ সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিরা থাকেন। তারা আমাকে প্রশ্ন করেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কিনা? তখন আমি উত্তরে বলি, আপনাদের প্রশ্নের মধ্যেই উত্তর রয়েছে। এই প্রশ্নের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় আপনি নিজে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের মধ্যে রয়েছেন। শুধু তারা নয়, দেশের সাধারণ মানুষও সর্বত্র একে অন্যকে প্রশ্ন করেন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কিনা? তার মানে দেশের সাধারণ মানুষও বিশ্বাস করে না ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে।

তিনি বলেন, তাছাড়া দেশে মব সন্ত্রাস চলছে। অনেকে এই মব সন্ত্রাসের ভয়ে ভীত। অনেকেই মব সন্ত্রাসের ভয়ে সত্য কথা বলছে না। মব সন্ত্রাসের পাশাপাশি সারাদেশে হত্যাকাণ্ড চলছে। প্রতিদিন পুলিশ অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করছে। জবাই করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। প্রকাশ্যে গুলি করে মানুষ হত্যা হচ্ছে। এই ধরনের চরম অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু নিপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলা হাস্যকর।

ব্যারিস্টার আনিসুল আরো বলেন, আজকে গায়ের জোরে সংবিধান পরিবর্তনের কথা বলছেন। আমি সকলকে অনুরোধ করব, গায়ের জোরে সংবিধান পরিবর্তনের কথা কল্পনা করবেন না। কারণ আগামী ১০ বছর পর আরেকটা বিপ্লবের মাধ্যমে বলা হবে, যারা সংবিধান পরিবর্তন করেছিলো তারা অপরাধী। তাদের বিচার হবে। সংবিধান যদি পরিবর্তন করতে হয় তাহলে নির্বাচিত পার্লামেন্ট দরকার। তাছাড়া ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের পর চাইলেও সংবিধান পরিবর্তন করে দেশ শাসন করা যেত। কিন্তু সেটা করা হয়নি। সাংবিধানিকভাবে শপথ নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন। তাই এখন আর সংবিধান পরিবর্তনের কথা ভাববেন না।

জাতীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক ফখরুল আহসান শাহজাদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সভায় প্রধান আলোক হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। 
হাওলাদার বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাক বাহিনীকে পরাজিত করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম। কোন দল বা গোষ্ঠীর জন্য দেশ স্বাধীন করিনি। দেশ স্বাধীন করেছি দেশের সাধারণ মানুষের মুক্তির জন্য। ওই যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণ দিয়েছে। তাই মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে কি অপমান করলে হৃদয়ের রক্তক্ষরণ হয়।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘসহ সর্বত্র মানবাধিকারের কথা বলছেন। অথচ দেশে প্রতিদিন নির্মমভাবে মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে। চাঁদাবাজি হচ্ছে। ধর্ষণ হচ্ছে। দখলবাজি হচ্ছে। এসবের দিকে প্রধান উপদেষ্টার নজর নেই। আমরা চাইনা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ব্যর্থ শাসক হোক। কিন্তু ইতিহাস যদি তাকে ব্যর্থ শাসকের কাতারে নিয়ে যায় তা হবে দেশ ও জাতির জন্য দুঃখজনক।

জাতীয় যুব সংহতির যুগ্না আহ্বায়ক এমএম আল জুবায়েরের পরিচালনায় প্রতিনিধি সভায় আরও বক্তব্য রাখেন-জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো- চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, লিয়াকত হোসেন খোকা, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসরিন জাহান রতনা, নাজমা আকতার, মো. আরিফুর রহমান খান, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, অধ্যাপক নূরুল ইসলাম মিলন, মো. বেলাল হোসেন।