০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০:২৮

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণায় কি আস্থা আছে, যা বললেন তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান  © টিডিসি ফটো

অন্তর্বর্তী সরকারের শুরু থেকেই বিএনপি দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে, ফেব্রুয়ারিতে হওয়ার ঘোষণাও আছে। ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে, এমন ঘোষণায় কতটা আস্থা আছে, জানতে চাইলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘বিএনপি প্রথম থেকেই বলে আসছিল, যত দ্রুত নির্বাচন হবে তত দ্রুত দেশে স্থিতিশীলতা আসবে। গত ১৭ বছরে জনগণের রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। তাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে।’

এর ফলশ্রুতিতে সমাজে অনেকগুলো খারাপ লক্ষণ দেখেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বেকারত্ব ও দারিদ্র্য বেড়েছে। শিক্ষা, চিকিৎসা ও কৃষি ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। সে জন্যই বলেছিলাম, যত দ্রুত নির্বাচন হবে, দেশের মালিক যারা, জনগণ যখন সিদ্ধান্ত নেবে, দেশ কারা চালাবে? তত দ্রুত দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। নির্বাচিত সরকার অবশ্যই জনগণের চাওয়া সেই বিষয়গুলো দেখবে। নির্বাচন হলেই রাতারাতি সব ঠিক হয়ে যাবে, তা না। ধীরে ধীরে সমস্যা কমতে শুরু করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেরিতে হলেও সরকার বিষয়টি বুঝতে পেরেছে। আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে চেয়েছিলাম। তারা ফেব্রুয়ারির ভেতরে করতে চায়। আমরা আস্থা রাখতে চাই, সরকার সে ব্যাপারে উদ্যোগ পর্যায়ক্রমে নেবে।’ এখনও দেশে ফেরেননি কেন, এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, ‘কিছু সঙ্গত কারণে ফেরা হয়নি। তবে সময় তো চলে এসছে? ইনশাল্লাহ দ্রুতই ফিরে আসব। রাজনীতি যখন করি। নির্বাচনের সঙ্গে ওতপ্রোত সম্পর্ক রয়েছে। জনগণের প্রত্যাশিত নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনের সময় কেমন করে দূরে থাকব? সেই প্রত্যাশিত নির্বাচনের সময়ে, অনুষ্ঠিত হওয়ার সময়ে জনগণের সঙ্গে, তাদের মাঝেই থাকব।’

আজ সোমবার (৬ অক্টোবর) বিবিসি বাংলার প্রকাশিত সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব থেকে এমন তথ্য জানা গেছে। নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে তারেক রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন রকম শঙ্কার কথা বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি।’ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকা ও নিজেকে মাস্টারমাইন্ড মনে করেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, আমি আমাকে কখনোই মাস্টারমাইন্ড হিসেবে দেখি না। জুলাই আন্দোলন সফল হয়েছে জুলাই মাসে। কিন্তু এর প্রেক্ষাপট শুরু হয়েছে বহু আগে।’

আরও পড়ুন: নির্বাচনের সময় দেশের জনগণের সঙ্গেই থাকব, বিবিসিকে তারেক রহমান

তিনি আরও বলেন, ‘এই আন্দোলনে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে অবদান রেখেছে, নির্যাতিত হচ্ছে। জনগণ সবার সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছে। মাদ্রাসা ছাত্ররা ছিল। গৃহিণীরা নেমে এসেছে। কৃষক, দোকানি, গার্মেন্টস কর্মী, সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নেমে এসেছেন, সাংবাদিকরা সক্রিয় ছিলেন। কারও ভূমিকাকে খাটো করে দেখতে চাই না। দলমত নির্বিশেষে প্রত্যেকের অবদান ছিল। এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ।’

আন্দোলনের ছাত্র নেতাদের যোগাযোগের বিষয়ে বলেন, ‘আমি বাইরে থেকে কাজ করায় যোগাযোগ অনলাইনে রাখতে হয়েছে। প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে বিভিন্নভাবে করতে হয়েছে।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি অবিস্মরণীয় ঘটনা এই আন্দোলন, এই আত্মত্যাগ। সাধারণ এমন আন্দোলনে শিশু হত্যা হয় না। কিন্তু এই আন্দোলনে যতটুকু মনে করে, ৬৩ জন শিশু মারা গেছে।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই আন্দোলনের ক্রেডিট কোনও রাজনৈতিক দলের নয়। অনেকে অনেক কিছু বলতে পারেন, সেটি তাদের অবস্থান। আমার দলের অবস্থান হলো, আন্দোলনে জনগণ সফলতা লাভ করেছে। এতে দুটি পক্ষ আছে। একটি পক্ষ হচ্ছে, দুই হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আরেক পক্ষ হচ্ছে, ৩০ হাজারের মতো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অন্ধ ও পঙ্গু হয়েছেন। সরকার, রাজনৈতিক দলসহ সবার উচিৎ, তাদের পাশে দাঁড়ানো।’