৩০ এপ্রিল ২০১৯, ২১:৫৮

তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির প্রত্যাশা ভিপি নুরের!

একাদশ জাতীয় সংসদে বিএনপি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এবার সমালোচকদের কাতারে যোগ দিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভিপি এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুলহক নুর। তিনি এ শপথ গ্রহণকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক চাপ বলে মনে করছেন।

দেশ ও জনগণের স্বার্থে আপোসহীন লড়াই-সংগ্রামে বিএনপির আন্দোলন ভিত্তিক চরিত্র হারাতে বসেছে বলে দাবি ডাকসু ভিপির। এছাড়া  নিজেদের অদূরদর্শী রাজনীতি, নেতৃত্বের ব্যর্থতা আর অসহায়ত্বের চিত্র তুলে ধরেছেন বলে মনে করছেন তিনি।

এই পরিপ্রেক্ষিতে  মু্ক্তিযুদ্ধের চেতনার বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত,সাম্য-মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে তৃতীয় আরেকটি দলের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন ছাত্রনেতা নুর।

মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, এতো বড় একটা দল চাপের মুখে আপোস করে সংসদে গিয়ে শেষ পর্যন্ত কি নিজেদের অদূরদর্শী রাজনীতি,নেতৃত্বের ব্যর্থতা আর অসহায়ত্বকেই তুলে ধরেনি? চাপ সহ্য করে যদি রাজনীতির মাঠে টিকতে না পারেন,নেতার মুক্তির জন্য আপোস করে যদি সংসদে যেতে হয়!

আপনারা কিভাবে দেশ ও জনগণের স্বার্থে আপোসহীন লড়াই-সংগ্রাম করবেন? জনগণ কি তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে আপনাদের উপর আস্থা রাখবে ?  ক্ষমতায় থাকা গতানুগতিক রাজনৈতিক দলসমূহ স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও মু্ক্তিযুদ্ধের চেতনার বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত,সাম্য-মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে পারেনি। আগামী ৫০ বছরেও পারবে না যদি কোন তৃতীয় শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তির আর্বিভাব না ঘটে।

তবে আশার বাণী হচ্ছে এদেশের ছাত্র- যুবকরা ঐক্যবদ্ধ হলে সকল অসাধ্যই অর্জন করা সম্ভব।সুতরাং ছাত্র-যুবক, তরুনদেরই দেশ গঠণে,ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায়, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বির্নিমানে এগিয়ে আসতে হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আটটি আসনে জয়লাভ করে। এর মধ্যে ছয়জন বিএনপির; বাকি দু’জন ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামের। নির্বাচনের পরপরই ভোটে ব্যাপক অনিয়ম এবং কারচুপির অভিযোগ তুলে তা প্রত্যাখ্যান করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানানোর পাশাপাশি তারা শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

তবে এসবের মধ্যেই শপথ নিয়েছেন গণফোরামের সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির খান। এরপর ২৫ এপ্রিল শপথ নেন ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে নির্বাচন করে বিজয়ী হওয়া জাহিদুর রহমান। এর জেরে ২৭ এপ্রিল তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

জাহিদুরকে ২৭ এপ্রিল বহিষ্কার করা হলেও ২৯ এপ্রিল শপথ নেন বিএনপির আরও চারজন। তারা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের মো. আমিনুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের মো. হারুনুর রশীদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া এবং বগুড়া-৪ আসনের মোশাররফ হোসেন।

এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্ধারিত সময়ে শপথ না নেওয়ায় বগুড়া-৬ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।