১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০:২৩

১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতের ভিসি, তার ফলাফল আমরা নির্বাচনে দেখতে পাচ্ছি: রিজভী

কথা বলছেন রুহুল কবির রিজভী  © সংগৃহীত

দেশের ১৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতপন্থী শিক্ষককে ভিসি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এর ফলাফল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে পাওয়া গেছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। আজ রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৮তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।

সরকার জামায়াতকে ‘পেট্রোনাইজ’ করছে উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ১৬টা বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতের ভিসি হয় কী করে? তার ফলাফল আমরা দেখতে পাচ্ছি এই নির্বাচনে। ১৬টা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতের ভাইস চ্যান্সেলর, এটা কী করে হতে পারে? এটা একটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সামগ্রিক মেকানিজম, যাতে একটি ছাত্র সংসগঠনকে বিজয়ী করা যায়। ঠিক একই কাজ ওই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়েছে। আপনি ব্যালট পেপার ছাপিয়েছেন প্রাইভেট একটি প্রেস থেকে। এটা তো করতে পারেন না।

তিনি বলেন, কেউ কেউ মনে করছেন, গণতান্ত্রিক যে ইচ্ছা বা সাধারণ জনগোষ্ঠী বা ছাত্রছাত্রীর ইচ্ছার প্রতিফলন, তার বিরুদ্ধাচারণ করলাম। কিন্তু এই প্রতিফলন ঘটানোর জন্য যদি কোনো ধরনের ইঞ্জিনিয়ারিং হয়, আমি জালিয়াতির চাইতে ইঞ্জিনিয়ারিংটাকে প্রাধান্য দিচ্ছি, নানা কৌশল করা হয়, তাহলে এটা কিন্তু ধরা পড়বে। যেটা আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতির ঐতিহ্য হচ্ছে এটা একটা উৎসবের মতো পরিস্থিতি। সেই উৎসবে পূর্ববর্তী ছাত্র সংসদের যারা প্রতিনিধি ছিলেন, ভিপি-জিএস ছিলেন, তারা কথা বলে। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর কোড অব কন্ডাক্ট তৈরি করলেন, তিনি তৈরি করলেন একটা আচরণবিধি যে বাইরের কেউ আসতে পারবে না। ভাই বিশ্ববিদ্যালয়টা কি বিচ্ছিন্ন কোনো দেশ নাকি? ভ্যাটিকান সিটি তো না, দেশের মধ্যে দেশ তো না। সারা বাংলাদেশের জীবনের যে প্রবাহ, সমাজের যে আকাঙ্ক্ষা, সেটা প্রতিফলিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তণ ছাত্র, তাদেরও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটা মিথস্ক্রিয়া থাকে, একটা ইন্টারেকশন থাকে, এই কারণে ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই আছে, ডিপার্টমেন্টভিত্তিক অ্যালামনাই আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে একটা সম্পর্ক রাখে। কারণ যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪-৫ বছর একটা ছাত্র পড়ে, তার প্রতি একটা আবেগ তৈরি হয়। ঠিক তেমনিভাবে যারা ছাত্র রাজনীতি করেছে, ওই নির্বাচন আসলে তারাও গিয়ে তার সময়ের অভিজ্ঞতার কথা ছাত্রদের বলে তার দলের পক্ষ থেকে। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর একটা উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সরকারের কিছু মানুষের সাথে যোগসূত্র হয়ে হাত-পা বেঁধে একটা একচেটিয়া নির্বাচন করার প্রচেষ্টা করেছেন, যাতে একচেটিয়া একটা ফলাফল তৈরি করা যায়।

ঢাবি উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বিএনপি নেতা বলেন, ভাইস চ্যান্সেলর তার কলিগদেরকে বলেছেন, আপনারা সুষ্ঠু নির্বাচন করুন। করতে না পারলে আমি সব ফাঁস করে দিব। তিনি কী ফাঁস করবেন? কী গোপন রেখেছেন? একটা নির্বাচনে তো সব কিছু উন্মুক্ত থাকতে হবে। কাকে কত টাকা ঘুষ দিয়েছেন কিনা এই সন্দেহ তো মানুষ করতেই পারে। আপনি ঘুষ দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার চেষ্টা করেছেন, না হলে এই কথা আপনি বলবেন কেন?