০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:৫৪

ঢাবি ছাত্রলীগকে নারীদের প্রতি ‘সবচেয়ে সহনশীল’ বলা কাদেরের সেই পুরো বক্তব্যে কী আছে?

কথা বলছেন কাদের  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ঘিরে অপপ্রচারে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আবদুল কাদের। আজ বৃহস্পতিবার ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘ডাকসুতে জিতা লাগবে না, কেবল বেঁচে থাকতে চাই।’ এ বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আগের খণ্ড খণ্ড বক্তব্য কেটে একটি অংশ জুড়ে দিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’

জানা গেছে, গত ২৬ আগস্ট ‘ডাকসু নির্বাচনী ভাবনা’ শীর্ষক একটি টকশোতে কাদেরসহ ডাকসুর একাধিক ভিপি প্রার্থী অংশ নেন। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নারীদের প্রতি সবচেয়ে বেশি সহনশীল ও শ্রদ্ধাশীল ছিল বলে এক পর্যায়ে উল্লেখ করেন।

নারীরা সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও বাদ যাচ্ছে না। সেখান থেকে প্রতিকারের উপায় কী, পরিকল্পনা নিয়ে উপস্থাপকের প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন বলেন, ‘নারীদের প্রতি বিরূপ মনোভাবটি প্রথমত মতবিরোদের জায়গা থেকে হয়। নারীদের নিয়ে প্রত্যেকটা মানুষের নিজস্ব আদর্শ রয়েছে। কেউ যদি মনে করে যে, একজন বামপন্থী নারী কিংবা একজন ডানপন্থী নারী।’

তিনি বলেন, ‘আজকে ছাত্রশিবিরের প্যানেলে নারী প্রার্থী, যিনি হিজাব পরেছেন। তার একটি ছবি বিকৃতি করা হয়েছে। একই সময়ে আমরা কী দেখেছি, জানেন? গত ৫ আগস্ট যখন টিএসসিতে একটি ছাত্রসংগঠন কর্তৃক আত্মস্বীকৃত কিছু রাজাকারকে নরমালাইজ করা হয়েছিল, তখন কিছু নারী নেতৃত্ব প্রতিবাদ করছিলেন। আমরা দেখি, সেখানে একজন ব্যক্তি এসে তাদের খুবই কাছ থেকে জুম শর্ট ভিডিও করছিল। পরে সেখান থেকে তাকে ধাওয়া দেওয়া হলে ছাত্রশিবিরের অংশে গিয়ে নিরাপত্তা লাভ করেছিল।’

‘এই যে তাকে সেভ দেওয়া। এরপর তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তখন তিনি পরিচয় দিলেন ছাত্রশিবিরের একজন জনশক্তি। সরকারি কবি নজরুল কলেজের। পরবর্তী সময়ে আমরা কোনো প্রতিকার দেখিনি, তাকে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ সময় তার কাছে বিভিন্ন ফেক আইডি পাওয়া গেছে। এই ফেক আইডি থেকে তিনি এসব ভিডিও চাউর করেছিলেন।’

কাদের বলেন, ‘নাম্বার টু, আমরা চট্টগ্রামের প্রেসক্লাবের সামনে একজন নারীকে ফ্লাই কিক দেওয়া হচ্ছিল। শুধুমাত্র ভিন্নমতাবলম্বী হওয়ার জন্য শুধু তাকে ফ্লাই কিক দেওয়া হচ্ছিল। সরি টু সে, ছাত্রলীগের হাজার দোষ নিয়ে কথা বলতে পারেন। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কথা বলেন, তারা নারীদের প্রতি সবচেয়ে সহনশীল ছিল, শ্রদ্ধাশীল ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। কিন্তু ১৫ জুলাই যে হামলাটা...।’

‘এই যে জুলাই-পরবর্তী নারীদের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব। শুধু ব্যক্তি মতাদর্শের কারণে বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব তৈরি হয়। আমরা দেখেছি, যতই ওই ব্যক্তি কালপ্রিট, ওই ব্যক্তিকে আইনে আওতায় আনতে হবে। যখন দেখি, চট্টগ্রামে একজন ব্যক্তি এক নারীকে ফ্লাই কিক দেওয়া হয়েছিল। যখন তাকে থানায় হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল, তখন তাকে ছাড়িয়ে আনতে মব ক্রিয়েট করেছিল ছাড়িয়ে আনতে। ঠিক তিন দিনের মাথায় তাকে ছাড়িয়ে এনে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হয়েছিল।’

কাদের বলেন, ‘আজকে যারা বলছে, নারীদের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব পোষণ করেন, তারা কালপ্রিট। তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। তখন এই সমস্ত ব্যক্তি প্রতিবাদ জানাননি। গণঅভ্যুত্থানে যে নারীরা পাশে দাঁড়িয়েছিল, তাদের থ্রেট মনে করছি। তারা প্রতিনিয়তই ট্রমাটাইজ হয়ে যাচ্ছে। তাই তারা রাজনীতিতে আসবে কীভাবে?’

‘এখন দেখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কী হয়, এখানে ভিন্ন একটি পরিবেশ আছে। কিন্তু একটা ছেলে এবং একটা মেয়ে বসে থাকলে, অনৈতিক কাজ করলে, সেটা প্রশাসন দেখবে। কিন্তু আমরা দেখছি, সে মোরাল পুুলিশিংয়ের শিকার হচ্ছে। কিন্তু মোরাল পুুলিশিং করার অধিকার আমার নেই।’