’৪৭, ’৭১ ও ২০২৪-এর ধারাবাহিকতা থাকতে হবে জুলাই সনদে
১৯৪৭, ১৯৭১ ও ২০২৪-এর ধারাবাহিকতা থাকতে হবে জুলাই সনদে বলে মন্তব্য করেছেন ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ। আজ শনিবার (২ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজ আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘জুলাই সনদের অবিচ্ছেদ্য ভিত্তি হোক দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র ও নতুন সংবিধান। জুলাই ঘোষণাপত্রে দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের ঘোষণা স্পষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। একচেটিয়া ক্ষমতার ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ১৯৭২ সালের সংবিধানকে বাতিল করে, জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণে ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি নতুন প্রজাতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়ণ করা ছাড়া ‘জুলাই আকাঙ্ক্ষা’ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দলিল ও ঘোষণাগুলোকে অনেকসময়ই রাজনৈতিক দলগুলো প্রতীকী মাত্রায় সীমিত রেখেছে- মুজিবনগর সরকারের ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’ কিংবা জাতীয় কমিশনসমূহের সুপারিশ বাস্তবায়নে যে ব্যর্থতা, তা-ই তার প্রমাণ। যদি ‘জুলাই সনদ’ ও একই রকম একটি অপ্রাতিষ্ঠানিক ও নন-বাইন্ডিং রাজনৈতিক ডিক্লারেশন হিসেবেই থেকে যায়, তবে তা হবে জনগণের সঙ্গে আরেকটি রাজনৈতিক প্রতারণা।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল-জুলাই সনদ সংবিধানের মৌলিক ও অপরিবর্তনীয় অংশে অন্তর্ভুক্ত না হলে এবং আগামী নির্বাচন যদি এই সনদ ও ঘোষণাপত্রের ভিত্তিতে না অনুষ্ঠিত হয়। তাহলে শুধু আন্দোলনের মর্যাদাই ক্ষুণ্ন হবে না, এটি হবে গণতন্ত্র ও জনগণের ওপর সরাসরি অবজ্ঞা। জুলাই সনদে ১৯৪৭, ১৯৭১ ও ২০২৪-এ স্বাধীনতার ইতিহাস ও সংগ্রামের ধারাবাহিকতাকে অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
এই ধারাবাহিকতায়, ১৭ বছরের ফ্যাসিবাদ, দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যেসব শহীদ, আহত ও নির্যাতিত মানুষ আত্মত্যাগ করেছেন- তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও মর্যাদা দেওয়া জরুরি।’
আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘জুলাই সনদে থাকতে হবে-জুলাই ইতিহাসের প্রাতিষ্ঠানিক সংরক্ষণ; জুলাইয়ের দলীয়করণ প্রতিহত করা; স্মৃতি, সত্য ও ন্যায়ের ভিত্তিতে আন্দোলনের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা। যে ঘোষণাপত্র জনগণের শতাব্দীর সংগ্রাম, রক্ত, অশ্রু আর প্রাণের বিনিময়ে গড়া ইতিহাস ধারণ করতে ব্যর্থ হবে, যে দলিল জাতির গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করতে পারবে না- সেই ঘোষণাপত্রকে আমরা মানবো না।
দরকার হলে আবার লড়াইয়ে নামব। জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে বিপ্লবে পরিণত করা ছাড়া আমরা থামব না, থামতে পারি না ইনশাআল্লাহ। আমরা তো মরেই গিয়েছিলাম জুলাইয়ে। ভাগ্যক্রমে বেঁচে আছি। এই আত্মবোধই আমাদের অস্ত্র, এই সাহসই আমাদের শপথ। সহস্র আত্মত্যাগ বৃথা হতে দেবো না, হতে দেওয়া যাবে না। এটাই আমাদের চূড়ান্ত ঘোষণা। এটাই আমাদের অঙ্গীকার।’