‘স্বৈরাচারের দোসর কেউ বিএনপির সদস্য হতে পারবে না’
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মাহবুবুর রহমান শামীম বলেছেন, স্বৈরাচারের দোসর কেউ বিএনপির সদস্য হতে পারবে না, যে সদস্য করবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও প্রাথমিক সদস্য নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, যারা চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী, তারা আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে সদস্য হতে চাইবে—তাদের সদস্য করা যাবে না। পতিত স্বৈরাচারের দোসররা বিএনপির সদস্য হতে পারবে না। কেউ সদস্য করলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি বলেছেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেবেন। কিন্তু লন্ডনে তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে বলা হয়েছে ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হবে। আপনি আপনার কথা রাখুন। বাংলাদেশের জনগণ ২০১৪ সালে ভোট দিতে পারেনি, ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে হয়েছে। ২০২৪ সালে ডামি নির্বাচন হয়েছে, সেখানেও মানুষ ভোট দিতে পারেনি। এখন মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।
তিনি আরও বলেন, রাজনীতিতে কিছু নতুন সংগঠন এসেছে—তাদের নাম আমি নিতে চাই না। ওই নতুন দলের নেতারা তারেক রহমানকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে, অপপ্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু তারেক রহমান বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। তিনি জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
আগামী নির্বাচনে বিএনপি জয়ী হবে এবং তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন উল্লেখ করে মাহবুবুর রহমান শামীম বলেন, ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ নেই। যারা নির্বাচন চায় না, তারা ভরাডুবির ভয়েই চায় না। একদিকে প্রার্থী ঘোষণা করছেন, অন্যদিকে ‘পিআর-পিআর’ বলে ষড়যন্ত্র করছেন। আমরা আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত আছি।
তিনি বলেন, অতীতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট করেছে নোয়াখালী জেলা বিএনপি। তারা আন্দোলনের কারণে ঘরে ফিরতে পারেনি। এখনো দলে দুই-একজন রয়েছেন, যারা অপকর্মে জড়িত। তারা রেহাই পাবেন না। দলের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসব বিষয়ে তারেক রহমানের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’। আমাদের দায়িত্ব শুধু নির্বাচনের আগে নয়, নির্বাচনের পরেও যারা অপকর্মে লিপ্ত হবে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।
নোয়াখালীর মাটি বেগম খালেদা জিয়ার ঘাঁটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনাদের জনগণের পাশে থাকতে হবে। দুঃখ-দুর্দশায় পাশে থাকতে হবে। জনগণ নেতার পাশে থাকলে সেই নেতা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। আন্দোলন-সংগ্রামে যারা ছিলেন, তাদের দিয়েই কমিটি গঠন করতে হবে।
নোয়াখালী জেলা বিএনপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্য সচিব মো. হারুনুর রশিদ আজাদ।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন—বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদ (ভিপি হারুন), জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. এবিএম জাকারিয়া, অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান, বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি, জেলা বিএনপি সদস্য এড. রবিউল হাসান পলাশ (অতিরিক্ত দায়িত্ব দফতর) কারিমুল হাই নাঈম, ফিরোজ আলম মতিন ও ওমর ফারুক টফি প্রমুখ। সভায় জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।