‘ছাত্রলীগ কর্মী’ থেকে সরাসরি ছাত্রদলের সেক্রেটারি, প্রতিবাদ জানিয়ে অব্যাহতি নিলেন ৪ জন
আইআইইউসিসহ (আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম) চট্টগ্রামের ৬ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি ঘোষণা করেছে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ। গতকাল রবিবার (২৭ জুলাই) সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত কমিটিগুলো ঘোষণা করার পরপরই নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অনুপ্রবেশের অভিযোগ তুলে পতদ্যাগ করেছেন আইআইইউসি শাখা ছাত্রদলের ৪ নেতা।
অব্যহতি নেওয়া চারজন হলেন-শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. রিপন, সহ-সভাপতি সাইদুল ইসলাম ইফতি ও মো. রবিউল হাসান সোহান এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত আসিফ। পরে আজ সোমবার (২৮ জুলাই) অবশ্যই দুইজন পতদ্যাগপত্র প্রত্যাহার করেছেন। তারা হলেন-সাইদুল ইসলাম ইফতি ও মো. রবিউল হাসান সোহান। এদিকে, বিকেলে বাকি দুইজনকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। তারা হলেন-মো. রিপন ও ইয়াসিন আরাফাত আসিফ।
জানা গেছে, আইআইইউসির সদ্য ঘোষিত ১৮ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে বখতিয়ার আহমেদ সানিফকে সাধারণ সম্পাদক পদ মনোনীত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত ৫ আগস্টের আগে তিনি ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার সরব উপস্থিত ছিল। এখন তিনি ছাত্রলীগ কর্মী থেকে সরাসরি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। কমিটি ঘোষণার পর এর প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুকে লেখালেখিও করতে দেখা গেছে। পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর আলাদা আলাদাভাবে পদত্যাগপত্র দিয়ে অব্যহতি নেন ৪ নেতা।
পদত্যাগপত্রে তারা লেখেন, সদ্য ঘোষিত কমিটিতে এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে সাধারণ সম্পাদক পদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যিনি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রও নন। এ ছাড়াও, কমিটিতে পদ বণ্টনে সিনিয়র-জুনিয়র ক্রমানুসার মানা হয়নি এবং ব্যক্তিগত সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বিশেষ করে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের টিম-৬ এর টিম প্রধান মো. কাজী জিয়া উদ্দিন বাসিতের পক্ষপাতমূলক ও স্বার্থান্বেষী ভূমিকা সংগঠনের আদর্শ, ন্যায়বোধ ও ত্যাগের চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে, আমি এই কমিটির অংশ হিসেবে থাকতে আগ্রহী নই।
টিম-৬ এর টিম প্রধান মো. কাজী জিয়া উদ্দিন বাসিত ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতির দায়িত্বে আছেন। এ বিষয়ে কথা বলতে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের প্রতিনিধি তাকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে পদত্যাগ করা শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. রিপন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ৫ আগস্টের আগে সানিফ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সব প্রোগ্রামে অংশ নিতেন। পাশাপাশি অনেক ছাত্রলীগের নেতার সঙ্গে তার ছবিও রয়েছে। তবে তিনি কোনো পদে ছিলেন না। ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার পরপর ফেসবুকে অনেক ছবি ভাইরাল হয়েছে এবং বিভিন্ন গ্রুপেও তাকে নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। সে কারণে প্রশ্নবিদ্ধ এমন কমিটি থেকে আমি পদত্যাগের সিদ্বান্ত নেই।
কেন্দ্রীয় ছাত্রদল থেকে বহিষ্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কমিটি গঠনে ব্যাপক অনিয়ম তুলে ধরে পদত্যাগ ও প্রতিবাদ করায় আমাকে পুরস্কৃত করলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। যেখানে অন্যায়-অনিয়ম, সেখানে প্রতিবাদ চলবে ইনশাআল্লাহ।