এনসিপিকে ‘শাপলা’ প্রতীক দিতে আইনি বাধা নেই: ১০১ আইনজীবীর বিবৃতি
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-কে ‘শাপলা’ প্রতীক বরাদ্দ দিতে কোনো আইনগত বাধা নেই বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের ১০১ জন আইনজীবী। আজ বুধবার (২৫ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিটি সাক্ষর করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমিনা আক্তার লাভলী এবং অ্যাডভোকেট লাবাবুল বাসার।
বিবৃতিতে আইনজীবীরা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের সংবিধান, The Bangladesh National Anthem, Flag and Emblem Order, 1972 এর ধারা ৪, এবং Bangladesh National Emblem Rules, 1972 এর বিধি ৩ অনুযায়ী ‘শাপলা’ প্রতীক বরাদ্দে কোনো বাধা নেই। তারা বলেন, ১৯৭২ সালের আইন ও বিধিমালায় জাতীয় প্রতীকের নির্ধারিত নকশা ও উপাদান ভিন্ন, এবং এনসিপি শুধু জাতীয় প্রতীকের একটি উপাদান ‘শাপলা’ চাইছে, সম্পূর্ণ প্রতীক নয়।
আইনজীবীদের ভাষ্যে, জাতীয় প্রতীকে ব্যবহৃত ‘ধানের শীষ’, ‘শাপলা’, ‘পাট পাতা’ ও ‘তারকা’—এই চারটি উপাদান আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন এবং এরই মধ্যে বিএনপি ও জেএসডি যথাক্রমে ‘ধানের শীষ’ ও ‘তারকা’ প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ পেয়েছে। অতএব, ‘শাপলা’ প্রতীক এনসিপিকে বরাদ্দ দিতে নির্বাচন কমিশনের আইনগত বাধা থাকার কথা নয়।
তারা আরও বলেন, জাতীয় প্রতীক নির্দিষ্ট রং ও বিন্যাসে উপস্থাপিত হয়, যেখানে শাপলা পানিতে ভাসমান থাকে এবং লাল-হলুদের সমন্বয়ে চিত্রিত হয়। অথচ এনসিপি সাধারণ ‘শাপলা’ প্রতীক চাচ্ছে, যা জাতীয় প্রতীকের নির্দিষ্ট রূপের সঙ্গে অভিন্ন নয়।
বিবৃতিতে উদাহরণস্বরূপ বলা হয়, জাতীয় ফল ‘কাঁঠাল’ প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ পেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, আর তৃণমূল বিএনপি পেয়েছে ‘সোনালী আঁশ’ প্রতীক। তাই ‘শাপলা’ জাতীয় ফুল হলেও রাজনৈতিক প্রতীক হিসেবে বরাদ্দে কোনো বিধিনিষেধ নেই বলেই তারা মত প্রকাশ করেন।
তারা আরও আশাবাদ ব্যক্ত করেন, নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনীয় আইনি শর্ত পূরণ সাপেক্ষে এনসিপিকে নিবন্ধন দেবে এবং প্রতীকের তালিকায় ‘শাপলা’ যুক্ত করে বরাদ্দ প্রদান করবে।
বিবৃতিদাতা আইনজীবীরা সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান, এ বিষয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে এবং আইনানুগ ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ তুলে ধরতে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা আইনজীবীরা হলেন— সিনিয়র অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ মারুফ, অ্যাডভোকেট রুহি সামসাদ, অ্যাডভোকেট রোকেয়া বেগম, অ্যাডভোকেট মো. তারেক ফয়সাল, অ্যাডভোকেট মো. আতিকুর রহমান, অ্যাডভোকেট মনির হোসেন, অ্যাডভোকেট গোলাম সাকলাইন, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ এরশাদুল বারী খন্দকার, ব্যারিস্টার মো. রিজওয়ান সামাদ, ব্যারিস্টার মো. মাজহারুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসানসহ অন্যান্য আইনজীবীবৃন্দ।