২৮ মে ২০২৫, ১৬:৫১

সাম্য হত্যাকাণ্ড নিয়ে ডিএমপির বক্তব্য প্রত্যাখান ছাত্রদলের

নয়পল্টনে তারুণ্যে সমাবেশ ও ইনসেটে রাকিবুল ইসলাম রাকিব  © সংগৃহীত

শাহরিয়ার ইসলাম সাম্য হত্যাকাণ্ড নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের বক্তব্য প্রত্যাখান করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। আজ বুধবার (২৮ মে) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে তারুণ্যের সমাবেশ এ কথা বলেন তিনি। 

রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, গতকাল ডিএমপি কমিশনার একটি বক্তব্যে তিনি বলেছেন, সাম্য হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে। আমরা এ সমাবেশ থেকে ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্যকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছি। আমরা সাম্য হত্যার বিচার চাই। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সাম্য হত্যার বিচার চাচ্ছি। সাম্যের পরিবার ও ছাত্রদল আনু্ষ্ঠানিকভাবে ডিএমপির এ বক্তব্য প্রত্যাখান করেছে। সাম্য হত্যার বিচারের কর্মসূচি চলমান থাকবে। গুপ্ত সংগঠনের বিরুদ্ধে ছাত্রদলের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী ও গুপ্তসংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে ছাত্রদল।

সর্বশেষ রাজধানীতে আমাদের ২ জন ভাইকে হারিয়েছি। শুধু তাই নয়, গত পরশুদিন তিতুমীর কলেজের প্রিন্সিপালের রুম গুপ্ত সংগঠনের ৮/১০ জন তালা মেরে দেয়। হত্যার উদ্দেশ্যে কুয়েটে ছাত্রদলের কর্মীর ওপর হামলা করা হয়েছে। এ ছাড়াও গতকাল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাম ধারার সংগঠনের ওপর হামলা হয়েছে। স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, ছাত্রদলের ধৈর্য পরীক্ষা নেবেন না। আমাদের ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে যায়, আমরা কাউকে শান্তিতে থাকতে দেব না।

তিনি বলেন যারা গুপ্ত-সুপ্ত সবার বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে শিবিরের হামলা ও গুপ্ত রাজনীতির নামে অপরাজনীতি চলমান থাকে, তাহলে সাম্য হত্যার বিচারসহ গত ১৫ বছরের আমাদের ভাইদের হত্যার বিচার না করলে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।

তিনি আরও বলেন, সার্টিফিকেট নির্ভর পড়াশুনার বিকল্প হিসেবে কর্মমুখী শিক্ষায় মনোনিবেশ করার জন্য ছাত্রদল কাজ করে যাচ্ছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে ছাত্রদল রাজনীতি করে। শিক্ষাখাতে ও প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে বাজেট বৃদ্ধির পাশাপাশি আধুনিক গবেষণাগার নির্মাণে ছাত্রদল নিরলস ভূমিকা পালন করে চলেছে। নারী  শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে শিক্ষানীতি প্রণয়নসহ ও কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে কাজ করে চলেছে।  

এর আগে আজ বুধবার (২৮ মে) বেলা ৩ টার দিকে জাতীয় সংগীত ও দলীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় বিএনপির তিন সংগঠন আয়োজিত ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল এই সমাবেশের আয়োজক। 

সমাবেশ উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনসহ আশপাশের এলাকায় ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে জড়ো হয়েছেন।

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিপরীতে সমাবেশ মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মঞ্চের সামনের সড়কে কোনো যানবাহন চলছে না। আশপাশের বিভিন্ন সড়কে দেখা দিয়েছে যানজট। 

সরেজমিন দেখা যায়, সমাবেশে যোগ দিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে এসেছেন নেতা-কর্মীরা। তারা সবুজ, হলুদ ও লাল রঙের ক্যাপ ও টি-শার্ট পরে সমাবেশে যোগ দেন, দিচ্ছেন নানা দলীয় স্লোগান।

তরুণদের কাছে টানতে মে মাসজুড়ে কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপির এই তিন সংগঠন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে চারটি বড় বিভাগ ও শহরে দুই দিন করে মোট আট দিন সেমিনার ও সমাবেশ। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম, খুলনা ও বগুড়ায় সেমিনার ও সমাবেশ হয়েছে। সর্বশেষ আয়োজন রাজধানী ঢাকায়।

আয়োজকদের ভাষ্য, তরুণদের নিয়ে ধারাবাহিক সেমিনার ও সমাবেশ কেবল একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, এটি একটি বৃহৎ নীতিগত প্রয়াস। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতের রাষ্ট্রচিন্তায় তরুণদের সম্পৃক্ত করা হচ্ছে।