উচ্ছ্বাস নয়, মিছিল নয়—এটিএম আজহারের খালাসের পর জামায়াত আমির
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে খালাস দেওয়ার পর উল্লাস ও মিছিল না করার আহবান জানিয়েছেন দলটির আমির শফিকুর রহমান। এটিকে মহান আল্লাহর বিশেষ নিয়ামত বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। আজ মঙ্গলবার (২৭ মে) রায়ের পর ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে এ কথা বলেন।
জামায়াত আমির শফিকুর রহমান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এই রায় হক্বের ঝলক এবং মহান আল্লাহর বিশেষ নিয়ামত। উচ্ছ্বাস নয়, মিছিল নয়, স্লোগান নয়। মহান আল্লাহর শানে আসুন মাথানত করি। তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করি, তাঁর শুকরিয়া আদায় করি এবং আল্লাহ তায়ালার তাকবীর ধ্বনি উচ্চারণ করি।সকল সহকর্মীর প্রতি এটিই একমাত্র অনুরোধ।’
এর আগে মঙ্গলবার (২৭ মে) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ খালাসের রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, মোয়াজ্জেম হোসেন হেলালসহ দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দ।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন সাঈদী। এটিএম আজহারুল ইসলামের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক ও শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম।
আরও পড়ুন: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারকে খালাস
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে রংপুরে সংঘটিত গণহত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, নির্যাতনসহ ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধে তাকে মৃত্যুদণ্ড ও বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন। সে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ১৯ জুলাই তিনি রিভিউ আবেদন করেন, যেখানে ১৪টি যুক্তি তুলে ধরা হয়।
চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ তার আপিল শুনানির অনুমতি দেন। এরপর নিয়মিত আপিলের শুনানি শেষে আজ রায় দেন আদালত, যেখানে তাকে অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়। এ রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ার অবসান ঘটলো।