সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ডাকসু নির্বাচনে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: ঢাবি উপাচার্য
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০১৯, ১১:১৯ AM , আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯, ১২:৪৭ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেছেন, দলমত নির্বিশেষে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদানসহ সকল কাজ সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
আজ সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি একথা বলেন।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে এবং সকলে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করছে। সবাই অবাধে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন বলেও তিনি মনে করেন।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্ম-সংস্কৃতির মতাদর্শের এক বিরাট পরিবার। গঠিত কমিটি ও সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন আচরণবিধি ২০১৯ কার্যকর রয়েছে। এটি পালন করা সকলের নৈতিক দায়িত্ব।
এসময় ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক আচরণের দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করায় সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি প্রত্যাশা করেন, সবার শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা যেনে সব সময় অব্যাহত থাকে।
অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, ভিন্ন মতাদর্শ একটি সমাজের সৌন্দর্য। এটি টিকে থাকতে পারে একমাত্র উদারনৈতিক, মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক সমাজে। এরুপ সমাজে উগ্রতা, কট্টরবাদিতা, পরাজিত হয়- আর মানবিক ও উদার মূল্যবোধের বিকাশ ঘটে। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সুমহান ঐতিহ্য সমুন্নত থাকবে- এই আহবান জানান তিনি।
সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ভোট প্রদান ও নির্বাচিত হওয়ার অধিকার প্রয়োগ করে সমগ্র জাতির জন্য অতীতের ন্যায় একটি মহান আদর্শের উদাহরণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সৃষ্টি করবে এমন বিশ্বাস রেখে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের স্বাভাবিক পরিণতি জয়-পরাজয়কে ধৈর্য ও শ্রদ্ধাশীল চিত্তে মেনে নেয়া এক উদার মানবিক মূল্যবোধ। শিক্ষার্থীদের এ মূল্যবোধের কোনো ঘাটতি আছে- কেউ যাতে মনে করতে না পারে সে ব্যাপারে সকলের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
ক্যাম্পাসে বিদ্যমান শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ যাতে কোনোক্রমেই বিঘ্নিত না হয় সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশেষ করে প্রক্টরিয়াল টিম সতর্ক থাকবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, নির্বাচনের দিন এবং এর আগে ও পরে প্রক্টরিয়াল টিমকে সহায়তা করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এবিষয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
নির্বাচনের সকল কর্মযজ্ঞ ত্রুটিমুক্ত ও নিখুঁত করার দাবি করা কঠিন জানিয়ে ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘অনিচ্ছাকৃত বিভিন্ন ভুল-ত্রুটি হয়তো রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট সবার পরিশ্রম ও আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। দীর্ঘ ২৮ বছর পর এ ধরণের গুরুত্ববহ বিশাল কর্মযজ্ঞের আয়োজন করতে আমাদের পদে পদে নতুন করে ভাবতে হয়েছে, সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’ এসময় প্রথমবারের মতো শিক্ষার্থীদের ডাটাবেজ তৈরি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর সুফল বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজে গভীরভাবে অনুভূত হবে।
চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অবশ্যই জয়যুক্ত করতে হবে উল্লেখ করে অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, নির্বাচনের পূর্বে, সময়ে এবং নির্বাচন-উত্তরকালে যাতে শিক্ষার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে তার জন্য শিক্ষার্থীসহ সকলের সক্রিয় সমর্থন ও সচেতন প্রয়াস কাম্য।
দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীরা ইতিহাস সৃষ্ঠি করতে যাচ্ছে উল্লেখ করে সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঐতিহ্যমণ্ডিত আমাদের প্রিয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব ও মর্যাদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাক।’
এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছাড়াও দুই উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, কোষাধ্যক্ষ, চিফ রিটার্নিং অফিসার, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থী এবং সাংবাদিকেরা সিনেট ভবনে উপস্থিত ছিলেন।