২৬ এপ্রিল ২০২৫, ২০:২০

ভারত-বিদ্বেষী মনোভাব যুদ্ধ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করেছে: ছাত্র ইউনিয়ন

ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা  © টিডিসি

‘মুখে সংস্কারের কথা বললেও এখন পর্যন্ত আমাদের সামনে কোনো কার্যকর সংস্কার দেখাতে পারছে না’—মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে ভারত-বিদ্বেষী মনোভাব দেখা যাচ্ছে। সেই মনোভাব ঘিরে যুদ্ধ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমরা দেখেছি, আওয়ামী লীগ নেতাদের নিরাপদে দেশত্যাগের সুযোগ করে দিয়ে ‘ডেভিল হান্ট’-এর নামে মানুষকে গ্রেপ্তার করে এক ধরনের অরাজকতা তৈরি করা হয়েছে।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর আমাদের স্বপ্ন ছিল—বাংলাদেশ হবে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। কিন্তু গত ৫৪ বছরে আমরা দেখেছি, যারাই ক্ষমতায় এসেছেন, তারাই বাংলার মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন। একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করার চেষ্টা করেছেন।

আমরা গত জুলাইয়ে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটিয়েছি। আমাদের স্বপ্ন ছিল, স্বৈরাচারী সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের সূচনা হবে। কিন্তু ৫ আগস্টের পর আমরা দেখেছি, মুক্তিযুদ্ধের পর যেমন মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির উত্থান হয়েছিল, ঠিক তেমনি অবস্থা এখনো বিদ্যমান। জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থি পথচলা শুরু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর মাজারে হামলা হয়েছে, মন্দিরে হামলা হয়েছে, মসজিদেও হামলা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ৮ আগস্ট। ১২ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রনেতাকে হত্যা করা হয়েছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রলীগ নেতাকেও হত্যা করা হয়েছে। আমরা বলতে চাই, অপরাধী যে-ই হোক, তার বিচার করতে হবে। বিচার না করে মবের সৃষ্টি করে কখনো এই বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না।

‘বাংলাদেশকে ব্যবহার করে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অস্ত্র সরবরাহের পথ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। ৫ আগস্টের পরে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা হয়েছে।’

শ্রমিকদের বেতন ভাতা নিয়ে তিনি বলেন, ঈদের আগে শ্রমিকরা তাদের পাওনা আদায়ের জন্য আন্দোলন করেছে। সেখানে পুলিশ তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। ধর্ষণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে লাঠিচার্জ করা হয়েছে। যারা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।