আ.লীগের শপথ: ৩ জানুয়ারি ১৯৭১ বনাম ২০১৯
৩ জানুয়ারি, ১৯৭১। আড়ম্বরপূর্ণ সমাবেশের আয়োজন ঢাকার রমনা রেসকোর্স ময়দানে। উদ্দেশ্য- জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ দলীয় ৪১৯ জন সদস্য শপথ গ্রহণ করবেন। অনুষ্ঠান শুরুর একপর্যায়ে ধীর স্থির পায়ে আসলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পরিচালনা করলেন শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। সমাবেশে নব নির্বাচিত পরিষদ সদস্যগণ দেশে শোষণ, অবিচার ও বৈষম্যমুক্ত এক নয়া সমাজ গড়ার জন্য ১১ দফা ও ৬ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের শপথ গ্রহণ করেন তারা। পরে সমাবেশে উপস্থিত হাজার হাজার জনতার সামনে নির্বাচিত গণপ্রতিধিরা শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন।
সেই নির্বাচন ও শপথ গ্রহণের পর কেটে গেছে ৪৮ বছর। আজ ২০১৯ সাল। তবে ১৯৭১’র মত আজও ৩ জানুয়ারি। স্বাধীন বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের পর শপথ গ্রহণ করলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ মহাজোটের সংসদ সদস্যরা। বেলা ১১টার পর জাতীয় সংসদ ভবনের পূর্ব ব্লকের প্রথম লেভেলের শপথকক্ষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদ সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করান।
সেদিন শপথের সময় আওয়ামী লীগ প্রধান ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানের বিশাল জনসভায় বক্তৃতাকালে বলেছিলেন, ষড়যন্ত্র এখনও চলছে। চরম ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকতে হবে। ৬-দফার শাসনতন্ত্র প্রণীত হবেই, কেউ এটা ঠেকাতে পারবে না। বঙ্গবন্ধু তাঁর প্রদত্ত নীতি নির্ধারণী বক্তৃতায় শাসনতন্ত্র প্রণয়নের প্রশ্নে ঘোষণা করেন, সংখ্যায় বেশি আছি বলে একথা বলব না যে, কারো সহযোগিতা চাই না। আমরা সহযোগিতা চাই, তবে নীতির প্রশ্নে কোন আপোষ নেই।
আজ সকালে তার মেয়ে শেখ হাসিনা বলছেন, নির্বাচনে জেতার পর জনগণের প্রতি দায়িত্ব আরো বেড়ে গেল। সবাইকে নিয়ে কাজ করব। জনপ্রত্যাশা পূরণে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে ১৯৭০ সালের নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, দেশের জনগণ এবার প্রতীক দেখে ভোট দিয়েছে, প্রার্থী দেখে নয়। তিনি বলেন, ‘এটা ছিল ১৯৭০ সালের নির্বাচনের মত, জনগণ কেবল প্রতীক দেখেই তাঁদের ভোট দিয়েছে, তারা এটাও দেখেনি প্রার্থী কে ছিল। তারা নৌকাতে ভোট দিয়েছে, যেহেতু তাঁরা উন্নয়নের সুফল লাভ করেছে।’ ভারতের বিদায়ী হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে শেখ হাসিনা একথা বলেন।