২৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ১১:০৫

নির্বাচনী আমেজে উৎসবমুখর বিজিসি ট্রাস্ট ক্যাম্পাস

বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ

আর মাত্র তিনদিন। এরপরই বহুল প্রত্যাশার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। মাইকের আওয়াজ, জনসভা, পথসভা, উঠান বৈঠক ও গণসংযোগসহ লিফলেট বিতরণ ও পোস্টার-ব্যানার সাঁটানোর মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণার তোড়জোড় সর্বত্রই পরিলক্ষিত হচ্ছে। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে হাট-বাজারেও সবার মুখে মুখে নির্বাচনী আলাপ-আলোচনা শোনা যাচ্ছে। নির্বাচন কেমন হবে? নতুন সরকারকে হতে যাচ্ছে? তাই নিয়ে বাক-বিতণ্ডা চলছে সব জায়গায়।

গণজোয়ারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নির্বাচন নিয়ে তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা গেছে। নির্বাচনী আমেজ পরিলক্ষিত হচ্ছে বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (বিজিসিটিইউবি) তরুণ শিক্ষার্থীদের মাঝেও। বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকের পাড়, ক্যান্টিন, চেয়ারম্যানের ঝুপড়ি দোকান ও বাস থেকে শুরু করে ক্লাসের ফাঁকে শিক্ষার্থীদের আড্ডার বিষয়বস্তু হচ্ছে জাতীয় নির্বাচন। তরুণ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তারা খুবই আশাবাদী। তারা ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রত্যাশা করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ক্বানেতা সুলতানা দিশান নির্বাচন সম্পর্কে বলেন, ‘নিরাপদে ভোট দেওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সুরক্ষিত ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই।’বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মো. আজাদ বলেন, ভোটাধিকার, সুশাসন ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা এবং দুর্নীতি মুক্ত সরকার চাই।

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শামিলা সুলতানা শাওন বলেন, ‘এমন একটি নির্বাচন চাই যেখানে থাকবে না কোন সংশয়, ভীতি ও স্বজন হারানোর আশঙ্কা। যাতে আমরা স্বাধীনভাবে আমাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারব। এমন নির্বাচন চাই না যেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে না, থাকবে না রাষ্ট্রের সাধারণ নাগরিক হিসাবে নিজের ভোট প্রদানের সুযোগ। সুষ্ঠু নির্বাচন চাই যাতে নৈরাজ্য, হানাহানি ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবে না। যোগ্য নেতৃত্ব প্রদানের ক্ষমতা রাখে এমন ব্যক্তিকে জনগণের প্রতিনিধি হিসাবে দেখতে চাই।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমা আকতার মিলি বলেন, আমি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এমন সরকার চাই, যারা মানুষের নিরাপত্তা, নারী অধিকার ও দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র নিশ্চিত করতে পারবে। যেহেতু আমাদের দেশ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সেহেতু জনগণের মৌলিক চাহিদা ভোগ করার অধিকার আছে। যেই সরকার এই বিষয়গুলোর দায়িত্ব নিতে পারবে আমি মনে করি সেই দেশের সরকার হিসাবে উপযুক্ত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী বাবলু মিয়া বলেন, ‘আমরা অবশ্যই সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। সেজন্য আমি চাই বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়ন করা হোক। যাতে আমরা নিরাপদে ভোট প্রদান করতে পারি। আমি প্রত্যাশা করি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় আসুক।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী মেহেরুন্নেসা শিরিন বলেন, মাদকমুক্ত সমাজ চাই। আমি মাদক ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবারের কাউকে ভোট দিব না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাছনারা সুলতানা বলেন, কর্মসংস্থানের সুযোগ ও মত প্রকাশের নিশ্চয়তা চাই। আইনের শিক্ষার্থী সুলতান মাহমুদ নির্বাচন সম্পর্কে বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে সুষম রাষ্ট্র গঠনে অন্যায়, অবিচার, দুর্নীতি মুক্ত, সন্ত্রাস, ধর্মীয় অপব্যাখ্যা রোধ করে, সুশাসনের মাধ্যমে অহিংস বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় জনগণের সুষ্ঠু ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে জনবান্ধব সরকার দরকার। ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ছাত্র সাদিক হোসেন বলেন, স্বার্থের পিছনে না দৌঁড়ে, নীতির পিছনে দৌঁড়ে এমন দল, বিবেক বিবেচনায় যাকে ভাল বলে তাকেই আমি ভোট দিব ।

প্রসঙ্গত, গত ৮ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৮’ এর তফসিল ঘোষণা করেন। সকল অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়ে আগামী ৩০ ডিসেম্বর সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিপক্কতা অর্জনে ইতিবাচক পরিবর্তন মনে করছে অনেকেই। এই নির্বাচনকে ঘিরে সাধারণ মানুষ নতুন করে সুশাসন, সহনশীল রাজনীতি, পরমতসহিষ্ণুতা, রাজনৈতিক দলের সহিষ্ণু অবস্থান, শান্তি প্রতিষ্ঠা, নিরাপত্তা নিশ্চিত , দারিদ্র্য দূরীকরণ, বেকারত্ব দূরীকরণ, অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষাব্যবস্থা উন্নতকরণ, নাগরিক অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশের স্বপ্ন দেখছেন ।