ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
আজ ২৮ আগস্ট, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির পিতা এবং বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮৩ সালের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
১৯২৫ সালের ১ আগস্ট চাঁদপুর জেলার রাঢ়ির চর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মরহুম এ ওয়াদুদ। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র ও বিভিন্ন আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ও পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং দৈনিক ইত্তেফাকের সাবেক কর্ম্যাধ্যক্ষ ছিলেন তিনি।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক,গণপ্রজাতন্ত্রী সরকারের শিক্ষা মন্ত্রী ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, চাঁদপুর তিন আসনের সংসদ সদস্য ডা. দীপু মনি তাঁর একমাত্র কন্যা এবং ডায়াবেটিক ফুট সার্জারীতে দেশের একমাত্র বিশেষজ্ঞ শল্য চিকিৎসক, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ (টিপু) তাঁর একমাত্র পুত্র।
গণতান্ত্রিক যুবলীগ (১৯৪৮), পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ (১৯৪৮) ও কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলার (১৯৫৬) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন জনাব এম এ ওয়াদুদ । পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ (১৯৪৯), সাপ্তাহিক ইত্তেফাক (১৯৪৯) ও দৈনিক ইত্তেফাক (১৯৫৩) প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন তিনি।
এছাড়া, ১৯৫৩-৫৪ সালে প্রাদেশিক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এম এ ওয়াদুদ । দু'বার নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ১ (এক) বার প্রাদেশিক ছাত্রলীগের সহ সম্পাদকের দায়িত্বও তিনি নিষ্ঠা ও সাফল্যের সাথে পালন করেন।
আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন তিনি । ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে ১৯৪৮ সালে একবার এবং ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত দ্বিতীয়বার কারাবরণ করেন তিনি।
১৯৫৪ সালে ৯২(ক) ধারা জারি করে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করার পর ছাত্র আন্দোলনকে স্তিমিত করার জন্য পুনরায় এম এ ওয়াদুদকে কারারুদ্ধ করা হয়। ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে তৎকালীন শাসকদের রুদ্ররোষের শিকার হয়ে দীর্ঘদিন আত্মগোপন করতে বাধ্য হন তিনি । ১৯৪৯ সালে ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে বঙ্গবন্ধুসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হন এম এ ওয়াদুদ ।
১৯৭৮ সালে সামরিক সরকারের সাথে হাত মিলিয়ে মন্ত্রীত্ব গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানোর জন্য তিনবার বিভিন্ন মেয়াদে কারাবরণ করেন এম এ ওয়াদুদ । সামরিক শাসনের সময়ে তার বিরুদ্ধে বারবার মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানিও করা হয়।
১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের পর ১৯৭১ পেরিয়ে ১৯৮৩ এর ২৮ আগস্টের মৃত্যুবরণের পূর্ব পর্যন্ত বাঙালির ভাষা স্বাধীনতা অর্থনৈতিক মুক্তির সকল আন্দোলনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন এ ভাষাবীর।
তার মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেছেন চাঁদপুরের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন সহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।