অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খানের ৬৩তম জন্মদিন আজ

নাতনিদের নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটছেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান
নাতনিদের নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটছেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান  © ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

আজ বুধবার (১৮ আগস্ট) এই সময়ের অন্যতম চিন্তাবিদ, লেখক, শিক্ষক ও জনপ্রিয় বক্তা অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খানের ৬৩তম জন্মদিন। ১৯৫৮ সালের এই দিনে তার জন্ম। বিশেষ এই দিনে ভক্ত-অনুরাগীদের শুভেচ্ছায় ভাসছেন তিনি। অনাড়ম্বর পরিবেশে পরিবারের সাথে জন্মদিন কাটাচ্ছেন বলে ফেসবুকের এক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান।

সলিমুল্লাহ খানের জন্ম ও বেড়ে ওঠা কক্সবাজারে। তিনি চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। স্নাতক ডিগ্রি নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে, পরে যুক্তরাষ্ট্রে নিউ ইয়র্কের দ্য নিউ স্কুল বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করেন। এখানে তার অভিসন্দর্ভের বিষয় ছিল ‘ইংল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং তত্ত্ব, ১৭৯৩-১৮৭৭’। এ অভিসন্দর্ভের জন্য তাকে পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়া হয়।

১৯৮৩-৮৪ সালে সলিমুল্লাহ খান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। ১৯৮৫-৮৬ সালে অল্প দিনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতা করেন। ১৯৮৬ সালে বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান পড়াশোনা করতে। ১৯৯৯ সালে দেশে ফিরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় যুক্ত হন। বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের (ইউল্যাব) অধ্যাপক হিসেবে স্থায়ী হয়েছেন। পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন ইউল্যাবে স্থাপিত সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড থিওরির। এ ছাড়া এশিয়ান শিল্প ও সংস্কৃতি কেন্দ্র, আহমেদ ছফা রাষ্ট্রসভাসহ বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত।

ছাত্রাবস্থায় ১৯৭৬ সালে লেখক-চিন্তাবিদ আহমদ ছফার সঙ্গে সলিমুল্লাহর পরিচয়। সেই সূত্রে পরিচয় ‘জ্ঞানতাপস’-খ্যাত অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে। এ দুজনের সংস্পর্শ তার মানস গঠনের বেশ ভূমিকা রাখে। সে কথা এখনো প্রকাশ্যে স্বীকার করেন সলিমুল্লাহ খান। কিছু সময়ের জন্য তিনি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের ছাত্র শাখার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বলা হয়ে থাকে, তার চিন্তা মার্কসবাদের পাশাপাশি উত্তরাধুনিক ও উত্তর-কাঠামোবাদী চিন্তাধারায় প্রভাবিত।

সলিমুল্লাহ খানের আলোচনার ভিত্তি মার্কসবাদী তত্ত্ব। উপনিবেশবাদবিরোধী আন্দোলনের তাৎপর্য নিয়ে তার উল্লেখযোগ্য আলোচনা আছে। ভাষা নিয়েও তিনি উৎসাহী। বাংলা ভাষায় শিক্ষার বিস্তার ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহার নিয়ে তার প্রস্তাবনা রয়েছে। পশ্চিমা চিন্তাধারা ও বক্তব্যকে ঔপনিবেশিক এবং সাম্রাজ্যবাদী লিগ্যাসির মাধ্যমে বিশ্লেষণ করেন। এই দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি শার্ল বোদলেয়ার, জাঁক লাকা, ওয়াল্টার বেঞ্জামিন, মিশেল ফুকো, ফ্রানৎস ফানোঁ, লেভি স্ত্রস, এডওয়ার্ড সাঈদ, তালাল আসাদ ও অন্যান্যদের ওপর লেখালেখি করেছেন। বাংলায় পশ্চিমা দর্শনের গুরুত্বপূর্ণ ভাষ্যকার হিসেবে তিনি পরিচিত।

সলিমুল্লাহ খান আব্দুর রাজ্জাকের বিখ্যাত বক্তব্যের ওপর একটি বই লেখেন। ১৯৮১ সালের বইটির নাম ‘বাংলাদেশ: স্টেট অব দ্য নেশন’। যা পরে ‘বাংলাদেশ: জাতীয় অবস্থার চালচিত্র’ নামে অনূদিত হয়।  তার অন্যান্য আলোচিত বইয়ের মধ্যে আছে বেহাত বিপ্লব ১৯৭১ (সম্পাদনা) , সত্য সাদ্দাম হোসেন ও স্রাজেরদৌলা, আমি তুমি সে, সাইলেন্স: অন ক্রাইম অব পাওয়ার, আহমদ ছফা সঞ্জীবনী, স্বাধীনতা ব্যবসায়, আহমদ ছফার স্বদেশ, আদমবোমা, সক্রাতেসের তিন বাগড়া প্রভৃতি।


সর্বশেষ সংবাদ