শুভ জন্মদিন ‘জ্ঞানের বাতিঘর’ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
দেশের মানুষের কাছে তিনি ‘জ্ঞানের বাতিঘর’ হিসেবে পরিচিত। তার স্বপ্ন আলোকিত মানুষ গড়বেন। সে স্বপ্ন থেকেই গত তিন দশক ধরে তিনি 'আলোকিত মানুষ চাই' এই আকাঙ্ক্ষা ও অঙ্গীকারে কাজও করে চলেছেন। সরল বক্তব্যে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখানো মানুষটি তাই আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবেও পরিচিত। সমালোচক ও সুবক্তা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ৮২তম জন্মদিন আজ রবিবার (২৫ জুলাই)।
১৯৪০ সালের এই দিনে কলকাতার পার্ক সার্কাসে জন্মগ্রহণ করেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে অধ্যাপক সায়ীদ ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। এ কেন্দ্রের পরিচালনায় বই পড়া কর্মসূচির মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের হাজার হাজার স্কুলপড়ূয়াকে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করেছেন।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের পৈতৃক নিবাস বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার কামারগাতি গ্রামে। তার বাবা আযীমউদ্দিন আহমদ ছিলেন স্বনামধন্য শিক্ষক। মায়ের নাম করিমুন্নেসা। শিক্ষক হিসেবে নিজের বাবার অসামান্য সাফল্য ও জনপ্রিয়তা শৈশবেই তাকে এ পেশার প্রতি আকৃষ্ট করে। তাই তিনি ১৯৬১ সালে কর্মজীবন শুরু করেন শিক্ষকতা দিয়েই। মুন্সীগঞ্জ হরগঙ্গা কলেজে খণ্ডকালীন প্রভাষক হিসেবে যোগ দেওয়ার পর সিলেট মহিলা কলেজ, রাজশাহী কলেজ ও ঢাকায় ইন্টারমিডিয়েট টেকনিক্যাল কলেজে (বর্তমানে ঢাকা বিজ্ঞান কলেজ) শিক্ষকতা করেন। এরপর তিনি ঢাকা কলেজে যোগদান করেন।
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ব্যক্তিত্বের প্রায় সব দিক সমন্বিত হয়েছে তার সংগঠক সত্তায়। 'আলোকিত মানুষ চাই'- এ মন্ত্রে সারাদেশে বই পড়া আন্দোলনের অগ্রযাত্রী হিসেবে প্রায় তিন দশক ধরে তিনি রয়েছেন সংগ্রামশীল। ষাটের দশকে বাংলাদেশে যে নতুন ধারার সাহিত্য আন্দোলন হয়, তিনি ছিলেন তার নেতৃত্বে। বাংলাদেশে টেলিভিশনের সূচনালগ্ন থেকে মনস্বী ও রুচিবান ব্যক্তিত্ব হিসেবে আবির্ভূত হন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। কর্মময় জীবনের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি একুশে পদক, র্যামন ম্যাগসাইসাই, জাতীয় টেলিভিশন, বাংলাদেশ বুক ক্লাব পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।