সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর ৮৬তম জন্মদিন আজ
ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর ৮৬তম জন্মদিন আজ। তিনি একাধারে প্রাবন্ধিক, শিক্ষাবিদ, গবেষক হিসেবে পরিচিত। ১৯৩৬ সালের ২৩ জুন বিক্রমপুরের বাড়ৈখালীতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৫০ সালে তিনি ঢাকার সেন্ট গ্রেগোরিস হাই স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পাশ করে ভর্তি হন নটরডেম কলেজে। সেখান থেকে ইন্টারমিডিয়েটে সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হন প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে। ১৯৫৬ সালে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তার শিক্ষা জীবন কেটেছে ঢাকা, রাজশাহী, কলকাতা ও যুক্তরাজ্যে।
এরপর নিজ এলাকা মুন্সিগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজে শিক্ষকতায় নিয়োজিত হন। এসময় জগন্নাথ কলেজেও খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন এ শিক্ষাবিদ। পরের বছর ১৯৫৭ সালে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে। শিক্ষক হিসেবেও বেশ জনপ্রিয় ছিলেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। পরবর্তীতে যুক্তরাজ্যের লিডস ইউনিভার্সিটি থেকে পোস্ট গ্রাজুয়েট এবং লেজিস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতাকালে তিনি মাসিক পরিক্রমা (১৯৬০-৬২), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পত্রিকা (১৯৭২), ত্রৈমাসিক সাহিত্যপত্র (১৯৮৪) ইত্যাদি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করেন।
এছাড়া তিনি ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেটেরও সদস্য ছিলেন। দুবার তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের উপাচার্য নিয়োগের প্যানেলে মনোনয়ন পেলেও ভিসি পদ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি কলাম লেখক হিসেবেও জনপ্রিয়। সত্তরের দশক থেকে বিভিন্ন দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখে আসছেন তিনি। তার লেখা কলামও ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পায়। ওসমানী উদ্যান, লালন ফকিরের আখড়া, আড়িয়ল বিল রক্ষাসহ নানা আন্দোলনে তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যুক্ত থেকেছেন দেশের নানা গণতান্ত্রিক ও সামাজিক আন্দোলনে।
শিক্ষকতা থেকে অবসর গ্রহণের পর বর্তমানে তিনি সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক ত্রৈমাসিক পত্রিকা ‘নতুন দিগন্ত’ সম্পাদনা করছেন। তার রচিত বইয়ের সংখ্যা প্রায় ১১০টি। এর মধ্যে প্রবন্ধ ছাড়াও রয়েছে অনুবাদ ও কথাসাহিত্যের বই। তিনি সাম্যবাদী রাজনৈতিক দর্শনে অবিচল। সমাজ বিপ্লবের প্রয়োজনীয়তার কথা তার প্রবন্ধ ও প্রবন্ধগুলোর সমষ্টিগত উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে উঠে এসেছে। বর্তমানে তিনি ‘সমাজতান্ত্রিক বুদ্ধিজীবী সংঘে’র আহ্বায়ক।