মেডিকেলে প্রথম হয়েছিলেন বাবা, জানিয়ে তসলিমার স্ট্যাটাস
প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার পালিত হয় বিশ্ব বাবা দিবস। তাই ফেসবুক-টুইটারের যুগে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাদা করে গুরুত্ব পায় বিশেষ দিবসটি। বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সবাই আবেগঘন স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। বাদ যাননি ভারতে নির্বাসিত জনপ্রিয় লেখিকা তসলিমা নাসরিনও।
বাবা দিবসে তসলিমা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘বাবা দিবস বলে নয়, আমি এই মানুষটিকে প্রায়ই স্মরণ করি। যত দিন যায়, তত অবাক হই কী করে মানুষটি অজপাড়াগাঁ থেকে অসম্ভব মনোবল নিয়ে শহরে এসে মানুষের বাড়িতে জায়গীর থেকে মেডিকেলে কলেজে পড়েছেন, প্রথম হয়েছেন, ডাক্তার হয়েছেন, এনাটমির লেকচারার হয়েছেন, সিভিল সার্জন হয়েছেন, বিভিন্ন সরকারি মেডিকেলে কলেজে ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক হয়েছেন, বিভাগীয় প্রধান হয়েছেন।
শৈশব-কৈশোরে তাঁর অতি-শাসন আমার পছন্দ হতো না, কিন্তু যত দিন যায় তত অবাক হই, রক্ষণশীল মুসলিম সমাজে বাস করেও তিনি কী করে অমন আধুনিক ছিলেন, কখনও মসজিদে না গিয়ে, নামাজ না পড়ে, ইসলামি পোশাক না পরে, দাড়ি না রেখে পুরোটা জীবন কাটিয়েছেন এবং কন্যাদের বিয়ের কথা না ভেবে চিরকালই তাদের উচ্চশিক্ষা এবং স্বর্নির্ভরতার কথা ভেবেছেন!
মানুষটার ছোট ছোট ত্রুটি নিয়ে তাঁর বেঁচে থাকাকালীন প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেছি, কিন্তু যত দিন যায়, তত তাঁর একার সংগ্রাম, তাঁর বিজ্ঞানমনস্কতা, তাঁর যুক্তিবাদ, তাঁর নীতি আর আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নুয়ে আসে।’’
তসলিমা নাসরিনের বাবার নাম রজব আলী। তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক ছিলেন। ১৯৭৬ সালে তিনি ময়মনসিংহ রেসিডেন্সিয়াল স্কুল থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পাস করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি আনন্দ মোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পাস করেন।
এরপর তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেলে কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৯৮৪ সালে এমবিবিএস পাস করেন। ১৯৮৬ সালে থেকে ১৯৮৯ সালে তিনি সরকারী গ্রামীণ হাসপাতালে এবং ১৯৯০ সালে থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত মিটফোর্ড হাসপাতালে স্ত্রীরোগ বিভাগে ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) অ্যানেসথেসিওলজি বিভাগে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।