অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান: বর্ণাঢ্য জীবনের ইতিবৃত্ত
বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। আজ বুধবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর ২টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে তিনি মারা যান।
একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক, অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান একাধারে ছিলেন লোক সংস্কৃতি ও পল্লীসাহিত্য গবেষক। তার উল্লেখযোগ্য কাজ, বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা শিরোনামে ৬৪ খণ্ডে ৬৪ জেলার লোকজ সংস্কৃতির সংগ্রহশালা সম্পাদনা এবং ১১৪ খণ্ডে বাংলাদেশের ফোকলোর সংগ্রহমালা সম্পাদনা।
অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। এবং ১৯৬৪ সালে মুন্সিগঞ্জ হরগঙ্গা কলেজের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন। একই বছর তিনি জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) সহকারী অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৬৮-৭৩) এবং বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়েও (১৯৯৯-২০০১) শিক্ষকতা করেছেন।
২০০৯ সালে ২৪ মে তিনি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হন। তার পদের মেয়াদ তিনবার বাড়ানো হয়, শেষ হয় ২০১৮ সালে। অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
সবশেষ গত বছরের ২৮ জুন বাংলা একাডেমির সভাপতি হিসেবে ৩ বছরের জন্য তাকে নিয়োগ দিয়ে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এর আগে ২০১২ সাল থেকে বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন ড. আনিসুজ্জামান। সবশেষ ২৯ জানুয়ারি ২০২০ থেকে ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ সাল পর্যন্ত তিন বছর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়োগ পেয়েছিলেন আনিসুজ্জামান। কিন্তু গত বছরের ১৪ মে আনিসুজ্জামান মারা যান।
অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান একুশে পদক ছাড়াও বাংলা একাডেমি পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক পুরস্কার, কালুশাহ পুরস্কার, দীনেশচন্দ্র সেন ফোকলোর পুরস্কার,শহীদ সোহরাওয়ার্দী জাতীয় গবেষণা পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার পান।
অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানের বাবা এমআর খান কলকাতার সরকারি বাড়িতে অনুবাদক হিসেবে কাজ করেছিলেন। তাঁর দাদার দাদা এলহাদাদ খান এবং তার ভাই আদালাত খান ঐপনিবেশিক ভারতে অত্যন্ত প্রশংসিত নামী বুদ্ধিজীবী ছিলেন। শামসুজ্জামান খান মাত্র দুবছর বয়সে বাবাকে হারান। তার মা এবং দাদি তাঁকে লালন-পালন করেন।