‘মধুমতি’ উপন্যাস লিখে কথাসাহিত্যিকের পরিচিতি পান রাবেয়া

রাবেয়া খাতুন
রাবেয়া খাতুন  © ফাইল ফটো

প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন (৮৫) মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে রাজধানীর স্পেশালাইজড হসপিটালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি মারা গেছেন বলে জানা গেছে।

রাবেয়া খাতুনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের সাহিত্য ও শিল্পসংস্কৃতি অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও বাংলা একাডেমিসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন ৮৬ বছর বয়সী এ কথাসাহিত্যিক।

১৯৩৫ সালে বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণ করেন মহিয়সী এই নারী। তার পৈত্রিক বাড়ি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে। রাবেয়া খাতুনের স্বামী প্রয়াত সম্পাদক ও চিত্র পরিচালক এ টি এম ফজলুল হক। তাদের চার সন্তান-ফরিদুর রেজা সাগর, কেকা ফেরদৌসী, ফরহাদুর রেজা প্রবাল ও ফারহানা কাকলী।

উপন্যাস, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, কিশোর উপন্যাস, স্মৃতিকথাসহ চলচ্চিত্র, নাট্য জগত, সাহিত্যের সকল শাখায় সফল বিচরণ ছিলো তার। রাবেয়া খাতুনের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘মেঘের পরে মেঘ’ জনপ্রিয় একটি চলচ্চিত্র। ‘মধুমতি’ এবং ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ও প্রশংসিত হয়েছে। বাংলা একাডেমি, চলচ্চিত্র জুরি বোর্ড, লেডিস ক্লাব, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ, মহিলা সমিতিসহ অসংখ্য সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন রাবেয়া খাতুন।

রাবেয়া খাতুনের প্রথম উপন্যাস ‘মধুমতী’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৩ সালে। ক্ষয়িষ্ণু তাঁতী সম্প্রদায়ের জীবন সংকট ও উঠতি মধ্যবিত্ত জীবনের অস্তিত্ব জিজ্ঞাসার সেই উপন্যাসেই কথাসাহিত্যিক হিসেবে পরিচিতি পান তিনি। গুণী এই লেখিকার একশরও বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে। রেডিও, টিভিতে প্রচারিত হয়েছে অসংখ্য নাটক, জীবন্তিকা ও সিরিজ নাটক। উপন্যাস লিখেছেন পঞ্চাশটিরও বেশি। ছোটদের জন্যও বেশ কয়েকটি গল্প-উপন্যাস লিখেছেন রাবেয়া খাতুন।

সাহিত্যচর্চার জন্য তার পুরস্কারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো একুশে পদক (১৯৯৩), বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭৩), নাসিরুদ্দিন স্বর্ণপদক (১৯৯৫), হুমায়ূন স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮৯)। ছোটগল্পের জন্য পেয়েছেন নাট্যসভা পুরস্কার (১৯৯৮)।

সায়েন্সফিকশন ও কিশোর উপন্যাসের জন্য পুরস্কৃত হয়েছেন শাপলা দোয়েল পুরস্কার (১৯৯৬), অতীশ দীপঙ্কর পুরস্কার (১৯৯৮), ইউরো শিশুসাহিত্য পুরস্কার (২০০৩)। টিভি নাটকের জন্য পেয়েছেন টেনাশিনাস পুরস্কার (১৯৯৭), বাচসাস (বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি) পুরস্কার, বাংলাদেশ কালচারাল রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলেনিয়াম অ্যাওয়ার্ড (২০০০), টেলিভিশন রিপোর্টার্স অ্যাওয়ার্ডসহ (২০০০) অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেছেন রাবেয়া খাতুন।


সর্বশেষ সংবাদ