কারখানায় কাজ করে ভার্সিটি পড়ুয়া ছাত্র আজ জাপানের প্রধানমন্ত্রী
জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির প্রবীণ রাজনীতিবিদ ইয়োশিহিদে সুগা। এর মধ্য দিয়ে জাপানে শিনজো আবের দীর্ঘ নেতৃত্বের ইতি ঘটলো। তবে সদ্য পদত্যাগকারী প্রধানমন্ত্রী আবের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত সুগা। ধারণা করা হচ্ছে, আবের নীতি অনুযায়ী দেশ পরিচালনার কাজ করবেন তিনি।
জাপানের উত্তরের আকিতা জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সুগা। বাবা ছিলেন স্ট্রবেরিচাষি এবং মা স্কুলশিক্ষক। ১৮ বছর বয়সে তিনি গ্রাম ছেড়ে চলে আসেন টোকিও। কার্ডবোর্ড কারখানায় কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশোনার খরচ চালান তিনি। ১৯৭৩ সালে হোসেই ইউনিভার্সিটিতে নাইট স্কুলে আইন বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন সুগা। সেখানে পড়ার অন্যতম কারণ সবচেয়ে কম খরচে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া।
এখানেই আবের সঙ্গে সুগার পার্থক্য প্রকট। আবের বাবা জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং দাদা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। অন্যদিকে, এ পর্যন্ত আসতে সুগাকে অনেক বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে হয়েছে।
৭১ বছর বয়সী সুগা লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) একজন আইনপ্রণেতার সচিব হিসেবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৯৬ সালে তিনি জাপানের সংসদের নিম্নকক্ষের সদস্য হন। ২০০৫ সালে জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জুনিচিরো কইজুমির মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ছিলেন তিনি। পরে আবের সময় সুগার প্রভাব আরও বাড়তে থাকে। তিনি আবের প্রশাসনে মন্ত্রিপরিষদের প্রধান সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যা প্রধানমন্ত্রীর পর জ্যেষ্ঠতম পদ। সাংবাদিকদের কাছে সুগা ‘লৌহ দেয়াল’ হিসেবে পরিচিত।
শারীরিক অসুস্থতার কারণে মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর আগেই পদত্যাগ করেন শিনজো আবে। এরপর চলতি সপ্তাহের শুরুতে শাসক দল এলডিপির নেতৃত্ব অর্জনের পর বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) জাপানের সংসদের নিম্নকক্ষে ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন সুগা। ৪৬২টি ভোটের মধ্যে ৩১৪টি ভোট পেয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুগার সামনে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হবে জাপানের আর্থিক মন্দা কাটিয়ে ওঠা। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আগে থেকেই জাপান আর্থিক মন্দায় রয়েছে।