বর্ণবাদের অভিযোগে এবার মহাত্মা গান্ধীর মূর্তি অপসারণের দাবি
মহাত্মা গান্ধীর বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ তুলে তাঁর মূর্তি অপসারণের দাবি তোলা হয়েছে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের পক্ষ থেকে। ইংল্যান্ডের লিচেস্টার শহরে থাকা গান্ধীর মূর্তি অপসারণের দাবিতে করা একটি আবেদনে এরই মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার লোক সই করেছেন। অনলাইন ওই পিটিশনে মহাত্মা গান্ধীর বিরুদ্ধে ‘বর্ণবাদের’ অভিযোগ তোলা হয়েছে।
ঊনবিংশ শতকের শেষপাদে দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসকালে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী বা মহাত্মা গান্ধী কৃষ্ণাঙ্গদের বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। আর এ বিষয় নিয়েই গান্ধীর বিরুদ্ধে এই বর্ণবাদের অভিযোগ উঠেছে। এমন নয় যে, এমন অভিযোগ এই প্রথম উঠল। ২০১৭ সালে প্রথম বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক হইচই হয়। এমনকি মহাত্মা গান্ধীর জীবনীকার ও পৌত্র রাজমোহন গান্ধী এর আগে এ সম্পর্কে বলেছিলেন, এটা সত্য যে তিনি কখনো কখনো দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গদের বিষয়ে সংস্কারগ্রস্ত ছিলেন।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রিস্টলে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনকারীরা সপ্তদশ শতকের দাস ব্যবসায়ী এডওয়ার্ড কোলস্টনের মূর্তি নামিয়ে ফেলার পরপরই গান্ধীর মূর্তি অপসারণে পিটিশন দাখিলের বিষয়টি প্রথম সামনে আসে। এর আগে গত বছর ম্যানচেস্টারের কিছু শিক্ষার্থী একই দাবি তুলেছিলেন। সেখানেও গান্ধীর বিরুদ্ধে ‘কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট বর্ণবাদী মনোভাবের’ অভিযোগ তোলা হয়। আর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে এই একই অভিযোগ তুলে হওয়া আন্দোলনের মুখে ঘানার ঘানা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে থাকা গান্ধীর মূর্তি অপসারণ করা হয়। এবার লিচেস্টারের মূর্তিটি অপসারণেরও আন্দোলন হচ্ছে।
লিচেস্টার ইস্টের এমপি ক্লডিয়া উইবি সাম্প্রতিক এই পিটিশনকে ‘ভয়াবহ বিভ্রান্তি’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনকে পথচ্যুত করবে। তিনি বলেন, ‘মার্টিন লুথার কিংয়ের মতো করেই একটি আন্দোলনের জন্ম দিয়েছিলেন গান্ধী। ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার যেমন, তেমনি তাঁর অহিংস আন্দোলনের পথ পরিবর্তনের এক অনন্য শক্তি।’
এ বিষয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক ফয়সাল দেবজি বিবিসিকে বলেন, ‘গান্ধীর মূর্তি অপসারণ নিয়ে এই বিতর্ক অবান্তর। অন্য সবার মতোই তাঁর ভুল থাকতে পারে। কিন্তু তাঁকে অন্য দাস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলাটা বাড়াবাড়ি।’