জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের শেষ বিদায় (ফটোস্টোরি)
বাবার কবরের পাশে শায়িত হলেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। শুক্রবার (১৫ মে) সকাল সোয়া ১০টার দিকে রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে চির নিদ্রায় শায়িত হন তিনি।
তার ছেলে আনন্দ জামান জানান, আল মারকাজুল ইসলামীর স্বেচ্ছাসেবীরা সকাল ৯টার দিকে সিএমএইচ থেকে তার বাবার মৃতদেহ গ্রহণ করেন। পরে কোভিড-১৯ নীতিমালা অনুযায়ী সেখানেই গোসল-কাফনের ব্যবস্থা হয়।
তারা সিএমএইচ থেকে বাবার কফিন নিয়ে যান আজিমপুর কবরস্থানে। সেখানে জানাজা শেষে সোয়া ১০টার পর বাবাকে সমাহিত করা হয়, যোগ করেন তিনি।
দাফনের আগে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয় বলে জানান আনন্দ।
ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৪ মে) বিকাল ৪টা ৫৫ মিনিটে আনিসুজ্জামান। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
হৃদরোগ, কিডনি ও ফুসফুসে জটিলতা, পারকিনসন্স ডিজিজ এবং প্রোস্টেটের সমস্যা ভুগছিলেন তিনি। শেষ দিকে তার রক্তে ইনফেকশন দেখা দিয়েছিল। মারা যাওয়ার পর রাতে খবর আসে, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে তার মৃত্যুর খবরে নেমে আসে শোকের ছায়া। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অধ্যাপকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন।
তার মৃত্যুতে এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, “ড. আনিসুজ্জামান ছিলেন বাংলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। বাংলাদেশে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে তিনি অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন। তার মৃত্যু বাংলাদেশের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে পড়ার দিনগুলোতে আনিসুজ্জামানকে পেয়েছিলেন শিক্ষক হিসেবে। এক শোক বার্তায় তিনি বলেন, “তার মত বিদগ্ধ ও জ্ঞানী মানুষের মৃত্যুতে দেশের এক অপূরণীয় ক্ষতি হল।”
অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের পুরো নাম আবু তৈয়ব মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান। জন্ম ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়। শিক্ষাজীবনের প্রথমভাগ তার সেখানেই কাটে।
দেশভাগের সময় তিনি কলকাতার এক স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। এরপর আরও অনেকের মত আনিসুজ্জামানদের পরিবারও চলে আসে এপারে।