শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্যার ফজলে হাসান আবেদের দাফন আজ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৮:৪৩ AM , আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:০৩ AM
দেশের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদকে আজ রোববার দুপুরে সমাহিত করা হবে। এর আগে তাঁর মরদেহ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয়েছে। সেখানেই সাড়ে ১২টায় অনুষ্ঠিত হবে জানাজা।
স্যার ফজলে হাসান আবেদের স্মরণে আজ রোববার বেলা দুইটা থেকে মহাখালীতে ব্র্যাকের প্রধান কার্যালয় ব্র্যাক সেন্টারে একটি শোকবই খোলা হবে। এ ছাড়া আড়ং, ব্র্যাক ব্যাংক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে কাল সোমবার এবং সারা দেশে ব্র্যাকের আঞ্চলিক অফিসগুলোতে আগামী মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শোকবই খোলা থাকবে। শোকবই থাকবে ৩০ জানুয়ারি বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
বাংলাদেশের উন্নয়নের পালাবদলের অন্যতম পথদ্রষ্টা স্যার ফজলে হাসান আবেদ ৮৩ বছর বয়সে গত শুক্রবার রাত ৮টা ২৮ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তিনি মস্তিষ্কে টিউমারে আক্রান্ত হয়ে ২৮ নভেম্বর থেকে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এর আগে গত শনিবার দুপুরে ব্র্যাক বাংলাদেশের চেয়ারপারসন হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, জানাজা শেষে স্যার ফজলে হাসান আবেদকে বনানী কবরস্থানে তাঁর প্রথম স্ত্রী আয়েশা আবেদের পাশে সমাহিত করা হবে।
স্যার ফজলে হাসান আবেদকে শ্রদ্ধা জানাতে একটি স্মরণসভার আয়োজনের কথা জানিয়ে হোসেন জিল্লুর বলেন, আলোচনা করে দিনক্ষণ চূড়ান্ত হবে। আগামী মাসের শুরুতে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে ব্র্যাক গ্লোবালের বৈঠক হতে যাচ্ছে। ওই বৈঠকের পর স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হতে পারে।
ব্র্যাক গ্লোবালের চেয়ার আমিরা হকের সভাপতিত্বে আগামী বছরের ৯ ও ১০ জানুয়ারি বৈঠকটি হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে ব্র্যাক এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, স্যার ফজলে হাসান আবেদের মৃত্যুতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদ, নোবেল বিজয়ীসহ খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব প্রতিষ্ঠান শোক জানিয়েছে। এর ছাড়াও আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বদের শোক।
বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেন, ‘তাঁর কর্মের বিপুল বিস্তৃতি ও প্রভাব এবং যে পরিপূর্ণ বিনয়সহকারে কাজগুলো তিনি সম্পন্ন করেছেন, উভয়ই আমাদের শিক্ষার নিবিড় পাথেয় হয়ে থাকবে।’
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এস্থার দুফলো বলেন, ‘ফজলে হাসান আবেদের মতো মানুষ কয়টা হয়? তাঁর অবর্তমানে আমরা সবাই একটু ছোট হয়ে গেলাম।’
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, ‘দেশের সীমানা পেরিয়ে এশিয়া ও আফ্রিকার ১০টি দেশে ব্র্যাকের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিস্তৃতি ঘটিয়ে তিনি আমাদের জন্য এক অনুপ্রেরণাদায়ক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন। আমরা, ইউনিসেফের সবাই তাঁর উন্নয়ন ভাবনাগুলোর অনুপস্থিতি গভীরভাবে অনুভব করব।’
বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সহপ্রতিষ্ঠাতা মেলিন্ডা গেটস বলেন, ‘১৯৭২ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে প্রত্যাগত শরণার্থীদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের জন্য ১০ হাজার ৪০০ ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত আরও অর্থ সংগ্রহ করে তিনি ১৬ হাজার ঘর করেছিলেন। তারপরও কিছু অর্থ উদ্বৃত্ত থেকে গিয়েছিল, যা দিয়ে পরের প্রকল্প শুরু করেছিলেন। এমনই এক মহৎ মানবতাবাদী ছিলেন তিনি। তাঁর কাজ আমাদের চিরকালীন অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।’
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অশোকার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিল ড্রেইটন, পুলিৎজার পুরস্কারপ্রাপ্ত কলামিস্ট নিকোলাস ক্রিস্টফ, যুক্তরাজ্য আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ডিএফআইডি), অস্ট্রেলিয়া সরকারের বৈদেশিক সম্পর্ক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় (ডিএফএটি), সেভ দ্য চিলড্রেন, ইউকের প্রধান নির্বাহী কেভিন ওয়াটকিনস, বিওপি হাব, ওয়ার্ল্ড টয়লেট অর্গানাইজেশনের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক সিম, যুক্তরাষ্ট্রের সমাজকর্মী সাইদা রশীদ, টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শহীদুল ইসলাম, মেজর জেনারেল (অব.) সাহুল আফজাল চৌধুরী, ব্রিটিশ রেডক্রসের সোফেনা লালানি, ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটির গবেষক জিবাহ নোয়াকো প্রমুখ শোক প্রকাশ করেন।