‘আইয়োম রিপন ভিডিও’— কাঠমিস্ত্রি থেকে তারকা হওয়ার যাত্রা
রাতারাতি তারকা বনে যাওয়া হিরো আলমকে সবাই চিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিদিনি এমন হিরো আলমরা ভেসে আসছেন- যারা সাধারণ ইউজারদের মন কেড়ে নেয়। তাদের প্রতি আকৃষ্ট করে। কাঠমিস্ত্রি থেকে তারকা বনতে বসা নেত্রকোনার রিপনের গল্পটাও ভিন্ন নয়।
রিপন পেশায় কাঠমিস্ত্রি। আসবাবপত্র তৈরির দোকানে কাজ করেন। এর ফাঁকে মোবাইলে ফেসবুক দেখতেন। বুঝে উঠতে পারতেন যে আসলে ফেসবুকে কী লেখা রয়েছে। পড়েছেন তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত।
রিপন বলেন, ‘আমি ফেসবুকে কিছু পড়তে পারি না। আমার বন্ধুরা ফেসবুক খুলে দিয়েছে। যখন কাজ থাকে না, তখন আমি ছন্দ বানাই। মাস দুইয়েক আগের ঘটনা, একদিন মনে হলো ছন্দগুলো ভিডিও করি। ভিডিও করেছিলাম। পরে মনে হলো ফেসবুকে দেই। ফেসবুকে দেওয়ার পরে মানুষ সেগুলো নিয়ে কথা বলতে শুরু করে।’
গত ঈদে একটি ভিডিও ছেড়েছিলেন। সেই ভিডিওতে নিজের বাসায় ঈদের দাওয়াত দিয়েছিলেন বন্ধুদের। ভিডিওটি হাসি ঠাট্টায় সোশ্যাল মিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই তাকে গ্রামের কয়েকজন পেইজ খুলে দেন। পেইজটাও নাকি তারাই চালান। আর রিপন মাঝেমধ্যে নিজের ভিডিও আপলোড করেন।
এরমধ্যেই ফেসবুকে হুট করে জনপ্রিয় হয়ে গেছেন এই রিপন। এখন আর সেই ধকল সামলাতে পারছেন না। নামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভিডিও। অর্থাৎ রিপন সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘রিপন ভিডিও’ নামে পরিচিত হয়েছে গেছেন। মাত্র ক’দিনে ফেসবুক অনুসরণকারীর সংখ্যা পৌনে ৩ লাখ।
জনপ্রিয়তার যে ধকল রয়েছে সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। রিপন জানান, ‘আমি তো মোবাইল বন্ধ রাখি। সারাদিন মোবাইলে ফোন আসে। সবাই শুধু কথা বলতে চায়। জানতে চায় আমি কী করি, কোথায় থাকি এসব। আমার সাথে গল্প করতে চায়। এজন্য মোবাইল বন্ধ রাখি। না হলে কাজ করতে পারি না।’
হঠাৎ করেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অত্যধিক জনপ্রিয়তার পর তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, ‘আমরা গরীব মানুষ। দিন এনে দিন খাই। কাজ না থাকলে না খেয়েও থাকতে হয়। তবে পরিকল্পনা আছে ইউটিউবে একটা চ্যানেল খুলবো। দেখি জীবনের মোড় ঘুরানো সম্ভব হয় কিনা।’