শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের প্রয়াণ দিবস আজ
অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের ৫৭তম প্রয়াণ দিবস আজ শনিবার। ১৯৬২ সালের আজকের এই দিনে তিনি ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। একজন বাঙালি রাজনীতিবিদ হিসেবে বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে কূটনীতিক ও রাজনৈতিক মহল এবং সাধারণ মানুষের কাছে তিনি বাংলার বাঘ এবং হক সাহেব নামে পরিচিত ছিলেন। অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও তিনি কলকাতার মেয়র, সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, গভর্নর এবং পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।
শেরে বাংলার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, মরহুমের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ এবং আলোচনা সভা। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সকাল ৭টা ৩০মিনিটে মরহুমের মাজারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ ও তাঁর পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ এদিন সকালে মরহুমের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবে। এছাড়াও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপি, বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক গবেষণা পরিষদ প্রমুখ এ উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
প্রসঙ্গত, বাংলার বাঘ এ কে ফজলুল হক ১৮৭৩ সালের অক্টোবর মাসের ২৯ তারিখে বরিশাল জেলার বানরীপাড়া থানার চাখার গ্রামের সম্ভ্রান্ত কাজী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার শ্রদ্ধেয় পিতা ওয়াজেদ আলী ছিলেন বরিশালের খ্যাতনামা আইনজীবীদের অন্যতম। বিপুল সম্পদশালী পিতার একমাত্র সন্তান হলেও ফজলুল হক ছোট বেলা থেকেই বহু সদগুণের অধিকারী ছিলেন।
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হককে শৃঙ্খলা ও আদর্শের প্রতি অনুরক্ত করেই গড়ে তোলা হয়েছিল। তার বাল্যকাল থেকেই তেজস্বিতা, তীক্ষ্ণ মেধা ও প্রতিভার পরিচয় পাওয়া যায়। ঘরেই তার আরবি, ফারসি ও উর্দু শিক্ষা আরম্ভ হয় ফজলুল হকের। তার বয়স যখন ১৪ বছর তখন বরিশাল জেলা স্কুল থেকে প্রথম শ্রেণির বৃত্তি এবং পারিতোষিকসহ ঢাকা বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করে প্রবেশিকা পরীক্ষা পাস করেন। এরপর কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এফএ এবং পরে রসায়ন বিদ্যা, পদার্থ বিদ্যা ও গণিতে অনার্সসহ বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
এ কে ফজলুল হক ১৮৯৫ সালে গণিতে এমএ পাস করেন। বরিশালের রামচন্দ্র কলেজে কিছুদিন শিক্ষকতার পর ১৮৯৭ সালে তিনি বিএল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপরই তিনি পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতনামা আইনজীবী স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের সহকারী রূপে ১৯০০ সালে কলকাতা উচ্চ আদালতে আইন ব্যবসা শুরু করেন।
১৯০৬ সালে তিনি ডেপুটি ম্যাজিস্টেট হিসেবে চাকরি গ্রহণ করেন। কিন্তু সরকারের সঙ্গে মতবিরোধ হওয়ায় ছয় বছর পর ১৯১১ সালে চাকরি ছেড়ে আবার আইন ব্যবসায়ে নেমে পড়েন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক।